বাংলাদেশে হিন্দু স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা
ঢাকার দোহার উপজেলার পূর্ব লটাখোলা এলাকায় তপন কর্মকার (৪৫) নামে এক হিন্দু স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় ওই ব্যবসায়ীর ভাইয়ের স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার সকালে বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে এলাকাবাসী।
নিহত তপন কর্মকার উপজেলার লটাখোলা গ্রামের মৃত গোপাল কর্মকারের ছেলে। লটাখোলা এলাকায় তাঁর একটি স্বর্ণের দোকান ছিলো।
তপনের বড় ভাই কৃষ্ণ কর্মকার বলেন, মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার দিকে আমি বাড়ির খাবার ঘরে রাতের খাবার খাচ্ছিলাম। আমার স্ত্রীও আমার সাথে ছিল। অন্যরা যার যার ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। এমন সময় মুখোশ ও রেইনকোট পড়া কয়েকজন দুর্বৃত্ত বাড়ির সামনের প্রধান ফটক খুলে ভিতরে প্রবেশ করে। তাদের হাতে রামদা ছিলো। আমাদের চিৎকারের শব্দ পেয়ে ঘরে থাকা আমার ছোট ভাই তপন কর্মকার বেড়িয়ে এলে তাঁকে এলোপাথারি কোপাতে শুরু করে দুর্বৃত্তরা। দুর্বৃত্তদের কোপে আমার ভাইয়ে পেটের বিভিন্ন অংশ বেড়িয়ে আসে এবং হাতের একটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে দুর্বৃত্তরা আমার স্ত্রীকে মুখে চেপে জোর করে তুলে নিয়ে যায়।
দুর্বৃত্তরা চলে যাবার পর কান্নার শব্দ পেয়ে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। তাঁরা গুরুত্বর আহত তপনকে উদ্ধার করে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকায় প্রেরণ করেন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার রাতে ঘটনার পরপরই দোহার থানা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন।
এদিকে বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পূর্ব লটাখোলা এলাকারই ঝোপের একটি ডোবা থেকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় ওই গৃহবধূকে পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই গৃহবধূ অনেকটা সুস্থ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে আসেন দোহার সার্কেলের এএসপি জহিরুল ইসলাম, দোহার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাজ্জাদ হোসেন, ওসি (তদন্ত) আরাফাত হোসেনসহ পুলিশের কর্মকর্তারা।
দোহার সার্কেলের এসপি জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন বিষয় আমলে নিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। অচিরেই এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে আমরা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।