৮ আগস্ট বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী
মোহাম্মদ হাসানঃ আগামীকাল ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রতিটি ধাপে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী হিসেবে নয় একজন নীরব দক্ষ সংগঠক হিসেবে যিনি নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন এবং বঙ্গবন্ধুকে হিমালয় সমআসনে অধিষ্ঠিত করেছেন তিনি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।
কাল শনিবার সকালে বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু করবে আওয়ামী লীগ।
দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করবে আওয়ামী লীগ।
দিনটি যথাযথভাবে পালনের জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আহ্বান জানিয়েছেন।
১৯৩০ সালের ৮ অগাস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে নিহত হন তিনি।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শনিবার সকাল ১০টায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে।
সেখানে সকাল সাড়ে ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ ওয়েবিনারের আয়োজন করেছে সিআরআই।
শনিবার রাত ৮.৩০ মিনিটে আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে (httpswww.youtube.comusermyalbd)।
সুভাষ সিংহ রায়ের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেবেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য নাসরীন আহমদ, বর্তমান উপ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ, সাদেকা হালিম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সাংবাদিক অজয় দাশ গুপ্ত।
এছাড়া আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা করবে কৃষক লীগ। আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
অপরদিকে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকীতে নগদ অর্থ, সেলাই মেশিন ও ল্যাপটপ বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ের মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের বিস্তারিত গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল সকাল ১০.৩০টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করবেন। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত সচিব ফরিদা পারভীন, অতিরিক্ত সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের আর্থিক সাহায্য ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বঙ্গমাতার ৯০তম জন্মবার্ষিকীতে দুস্থ নারীদের সেলাই মেশিন ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নগদ টাকা দেয়া হবে। গোপালগঞ্জ জেলার দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে একশত ল্যাপটপ বিতরণ করা হবে। সব জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত সুবিধাভোগীদের তালিকা অনুযায়ী, ৬৪ জেলায় তিন হাজার ২০০ সেলাই মেশিন ও এক হাজার ৩০০ দুস্থ ও অসহায় নারীর মধ্যে দুই হাজার টাকা করে মোট ছাব্বিশ লাখ টাকা দেয়া হবে।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা জানান, প্রতি বছর মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় যথাযথ মর্যাদায় মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করে আসছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গমাতা ত্যাগ ও সুন্দরের সাহসী প্রতীক’। জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আর্থিক অনুদান গ্রহণের জন্য পাঁচজন, সেলাই মেশিন গ্রহণের জন্য পাঁচজন এবং ল্যাপটপ গ্রহণের জন্য পাঁচজন নির্বাচিত সুবিধাভোগী উপস্থিত থাকবেন। আর্থিক অনুদানের অর্থ ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত সুবিধাভোগীদের মোবাইল নম্বরে স্থানান্তর করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক উপস্থিত সুবিধাভোগীদের মধ্যে সেলাই মেশিন এবং ল্যাপটপ হস্তান্তর করবেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সারা দেশে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সমন্বয় করে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতর-সংস্থা বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উদযাপনে আলোচনা সভার আয়োজন করবে। যার মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতিটি পর্যায়, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন এবং দেশে নারীর ক্ষমতায়নে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের গৌরবময় ও অগ্রণী ভূমিকা সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে যাবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনসমূহ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপন করবে।