যমুনার উজানে ১৬হাজার ৭৮১কোটি টাকা ব্যায়ে বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধন হলো
মোহাম্মদ হাসানঃ যমুনা নদীর ৩০০ ফিট উজানে ১৬হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ব্যায়ে চার দশমিক আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি পৃথক ডাবল লেনের ডুয়েল মিটার গেজ বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ২৯ নভেম্বর রবিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে সেতুটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।
এ সময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর নির্মাণে দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের ব্যাপক উন্নতি হবে। সেই সঙ্গে আঞ্চলিকভাবে অর্থনৈতিক উন্নতি হবে।
এই সেতু নির্মাণ হলে রেল সংযোগে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,”আজকে সত্যি আমি খুবই আনন্দিত। আজ থেকে যমুনা নদীর ওপর পৃথক রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এই সেতু নির্মাণের ফলে আমি মনেকরি দেশের আভ্যন্তরীণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নতো হবেই আন্তর্জাতিকভাবেও আমরা লাভবান হতে পারবো।”
এ সময় সকলের উদ্দেশ্যে প্রত্যাশা ব্যাক্ত তিনি আরো বলেন, “আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে দেশের মানুষের ভাগ্যের আরো উন্নয়ন করতে হবে। তাহলেই জাতির পিতার কাক্সিক্ষত উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়তে আমরা সক্ষম হবো, ইনশাল্লাহ।”
রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডাবল-লাইন ডুয়েল-গেজের এই রেল সেতু নির্মাণের ফলে এ অঞ্চলে যোগাযোগব্যবস্থার প্রভুত উন্নতি হবে। এই ডুয়েলগেজ ডাবল-ট্র্যাক সেতুটি দেশের বৃহত্তম ডেডিকেটেড রেল সেতু হবে।
নতুন সেতুর ওপর দিয়ে ব্রডগেজ লাইনে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার এবং মিটার গেজ লাইনটিতে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে রেল চলতে সক্ষম হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মিত হলে ৮৮টি রেল চলাচল করতে সক্ষম হবে। প্রকল্পটি ২০২৫ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকার অনুমোদিত প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৭ হাজার ৭২৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) থেকে প্রকল্প সহায়তা হিসাবে এবং ২ হাজার ৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বাংলাদেশ সরকারের তহবিল থেকে আসবে।
২০১৪ সালের ২৫ থেকে ২৮ মে টোকিও সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে জাপানকে এই প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য অনুরোধ করেছিলেন। পরে ২০১৪ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ঢাকা সফরে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি উত্থাপন করেন।