ভাস্কর্য ইস্যু: মৌলবাদীদের উত্থান দেখছে কূটনীতিকরা
বাংলাদেশে ভাস্কর্য ইস্যুকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশে অবস্থিত প্রভাবশালী দূতাবাসগুলো। যদিও তারা এনিয়ে এখন পর্যন্ত কোন আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। প্রকাশ্যে তারা বলছে, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু একান্ত ঘরোয়া আলাপে তারা এটিকে বাংলাদেশে মৌলবাদী শক্তির উত্থানের প্রথম ধাপ হিসেবে দেখছেন। বাংলাদেশে কর্মরত একাধিক কূটনীতিকের সাথে কথা বলে তাদের মনোভাব জানার চেষ্টা করা হয়েছে। তারা দেখতে চাইছে সরকার কিভাবে বিষয়টির সমাধান করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মরত একজন কর্মকর্তা ব্যক্তিগত অভিমত জানিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারকে। তার মতে ‘ভাস্কর্য ভাঙ্গার বিষয়টি একটি মধ্যযুগীয় এবং অবৈজ্ঞানিক চিন্তা। এই চিন্তা আল-কায়েদা এবং আই.এস এর মস্তিক প্রসূত।’তিনি বলেন ‘সিরিয়া, আফগানিস্তান এবং ইরাকে দেখেছি ইসলামী জঙ্গীরা ভাস্কর্য বিরোধিতা করেছে। তারা অনেক প্রাচীন, ঐতিহ্যমন্ডিত, ঐতিহাসিকভাবে মহামূল্যবান ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলেছে।’তিনি বলেন ‘এখন বাংলাদেশে ঐ ধারার উত্থান দেখা যাচ্ছে।’তার মতে ‘ভাস্কর্য বিরোধিতার সংস্কৃতি বাংলাদেশের নয়।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন কূটনীতিক অনুষ্ঠানিক আলাপচারিতায় বলেছেন ‘ভাস্কর্য বিরোধিতা ইস্যুটি বিচ্ছিন্ন নয় বরং এটি বাংলাদেশকে মৌলবাদী রাষ্ট্রের দিকে ঠেলে দেয়ার প্রথম ধাপ। এর পর তারা পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভা যাত্রার বিরোধিতা করবে। আস্তে আস্তে তারা ইসলামী শরিয়াহ আইনসহ কট্টরপন্থী চিন্তাগুলো বাস্তবায়িত করার জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করবে।’
ভারতীয় দূতাবাসের একজন কূটনীতিক মনে করেন, ‘এই ইস্যুটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। মৌলবাদী গোষ্ঠী এই ইস্যুকে ঘিরে ঐক্যবদ্ধ হতে যাচ্ছে।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তা বলেন ‘আওয়ামী লীগই বাংলাদেশ একমাত্র শক্তিশালী সেক্যুলার রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগের বিকল্প হলো মৌলবাদী গোষ্ঠী।’
বাংলাদেশের সব দেশের কূটনীতিকরাই প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায়, বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে তারা এ বিষয়ে এখনই মন্তব্য করার চেয়ে পর্যবেক্ষণের বিষয়টিকেই গুরুত্ব দিতে চায়।
বাংলাইনসাইডার