সনদপ্রাপ্ত অমুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন জামুকা: মন্ত্রী সভায় আইনের খসড়া অনুমোদন
মোহাম্মদ হাসানঃ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর সদস্য হিসেবে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন বা আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসেবে সশস্ত্র যুদ্ধে নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে এমন রাজাকারদের তালিকা তৈরির বিধান রেখে বিজয় দিবসের আগে “জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন, ২০২০” এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছেন মন্ত্রিসভা। নতুন এ আইনে অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে গেজেটভুক্ত ও সনদপ্রাপ্ত অমুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করবেন মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল।
আজ ৭ ডিসেম্বর সোমবার মন্ত্রী পরিষদের সাপ্তাহিক মন্ত্রী সভা বৈঠকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মন্ত্রীসভা বৈঠক শেষে মন্ত্রী পরিষদ সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ২০০২ সালে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন হয়েছিল। সেই আইন পরিপূর্ণভাবে বর্তমান সময়ের চাহিদা পূরণ করতে পারছিল না। তাই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইনের খসড়া করেছে। এ আইন পাস হলে আগের আইন বাতিল হয়ে যাবে। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের নিবন্ধন কীভাবে হবে, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধ সংশ্লিষ্ট বিদ্যমান সংগঠনের নিবন্ধনের বিধান রয়েছে।
তিনি বলেন, কাউন্সিলের কার্যকলাপ পরিচালনা, অর্থায়ন, কাউন্সিলের তহবিল ও বাজেট কীভাবে হবে, এসব বিষয় রাখা হয়েছে। আগের আইনকে বদলে এ আইন করা হচ্ছে।
নতুন এই আইনটিতে রাজাকারদের তালিকা তৈরির সুযোগ রাখা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর সদস্য হিসেবে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন বা আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসেবে সশস্ত্র যুদ্ধে নিয়োজিত থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন, তাদের একটা তালিকা প্রণয়ন ও গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করবে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। আগের আইনে এ বিধান ছিল না।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, রাজাকারের তালিকা করার বিষয়টি খসড়া আইনে রাখা হয়েছে। আইনে সব বিষয়ে ডিটেইল করা নেই, এটা রুল করবে। স্বাধীনতাবিরোধী বলতে কি বোঝাবে রুলে তা বিস্তারিত বলা থাকবে। আগে আইন হোক, এরপর বিধি হবে । তবে কীভাবে এ তালিকা করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়নি। তাছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে গেজেটভুক্ত ও সনদপ্রাপ্ত অমুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন ও গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশের কথাও খসড়া আইনে বলা আছে। আগের আইনেও এ বিধান ছিল।