জাতীয় বই উৎসবে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী

মোহাম্মদ হাসানঃ শতাব্দীর ভয়াবহ বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি করোনা মহামারীর সংকটময় সময়েও যথাসময়ে দেশের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে সরকার। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবার বইয়ের প্রচ্ছদে নতুনত্ব আনা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের পেছনের মলাটে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনসহ বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন স্থিরচিত্র ক্যাপশনসহ সংযোজন করা হয়েছে।
আজ ৩১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতীয় বই উৎসবের অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক তুলে দিতে বই উৎসবের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ২৩ জন শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী।
এরপর স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র মিলনায়তনে কয়েকজন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পয়লা জানুয়ারি বই উৎসব না হলেও বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা বই পাচ্ছে। এবার ছাপা হচ্ছে প্রায় ৩৫ কোটি বই। আগামীকাল ১ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে ১২ দিনব্যাপী সারাদেশের স্কুলগুলোতে বই বিতরণ করা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে প্রকাশ, ২০২১ সালে সর্বমোট পাঠ্যপুস্তকের সংখ্যা ১০ কোটি ২৫ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৫টি। এর মধ্যে প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য ২ কোটি ৫৯ লাখ ৯২ হাজার ৬৭১, তৃতীয়-চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য ৬ কোটি ৯৬ লাখ ৯৭ হাজার ৩৭৪টি বই। এর মধ্যে ৯৪ হাজার ২৭৫ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রী) শিশুদের জন্য পাঁচটি ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ১৩ হাজার ২৮৮টি বিশেষ ভাষায় বই বিতরণ করা হবে। তবে, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের ভাষায় শুধুমাত্র বাংলা বইটি পাবে। এ বছর সাঁওতাল ভাষায় পাঠ্যপুস্তক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সাথে ৯ হাজার ১৯৬ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর জন্য ব্রেইল পদ্ধতির বই বিতরণ করা হবে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবার বইয়ের প্রচ্ছদে নতুনত্ব আনা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের পেছনের মলাটে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনসহ বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন স্থিরচিত্র ক্যাপশনসহ সংযোজন করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বই উৎসবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহাসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের প্রায় ৩০০ জন শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকগণ।