আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে বাংলাদেশ বহুদূর এগিয়ে: প্রধানমন্ত্রী

মোহাম্মদ হাসানঃ বাংলাদেশের প্রাচীনতম ট্রাই সার্ভিস প্রতিষ্ঠান সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ২৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) বিশ-একুশ কোর্সের গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনিতে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে ডিএসসিএসসি’র কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. জুবায়ের সালেহীন স্বাগত বক্তৃতা করেন।
এসময় তিনি বলেন, সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ বাংলাদেশের প্রাচীনতম ট্রাই সার্ভিস প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রথম বছরে ছিল ৩০ জন, তা বেড়ে ২২৫ জনে উন্নীত হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪৩টি বন্ধুপ্রতিম দেশের এক হাজার ২০৮ অফিসার এ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করেছেন। এই কোর্সেও ১৬টি বন্ধুপ্রতিম দেশের ৪৩ বিদেশি কর্মকর্তাসহ ২২৫ সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ শেষ করে পিএসসি অর্জন করছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে আজকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ২০৪১ সালের সৈনিক হিসেবে কাজ করবেন, দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে এবং দেশের ভাবমূর্তি যেন উজ্জল হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমি আশাবাদী, সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ তার শিক্ষা-প্রশিক্ষণের উচ্চমানের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে। এ প্রতিষ্ঠানের গ্র্যাজুয়েটরা তাদের অর্জিত জ্ঞান, ইচ্ছাশক্তি ও অঙ্গীকারের মাধ্যমে দেশকে একটি স্থিতিশীল, টেকসই, আত্মনির্ভরশীল ও সর্বোপরি গৌরবময় অবস্থানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে, এই দেশ লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন করেছি এবং এই দেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আভ্যন্তরীণ সম্পদসহ নানাবিধ সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা বিপন্ন মানবতার ডাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছি। মিয়ানমার থেকে প্রায় ১০ লাখেরও অধিক রোহিঙ্গা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে, তাদেরকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থে মিয়ানমার থেকে জোর করে বাস্তুচ্যুত করা দেশটির নাগরিকদের আশ্রয় দান এবং নিজ দেশে যাতে ফিরে যেতে পারে, সেজন্য আমরা কিন্তু কারো সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্বে লিপ্ত হইনি।
আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আলোচনার মাধ্যমে তারা যেন তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যায়। একটা বন্ধুত্বসুলভ মনোভাব নিয়েই আমরা এ কাজ করে যাচ্ছি। তবে যারা অন্যায় করছে নিশ্চয়ই সেটা আমরা বলবো। আমরা চাই, তারা তাদের নাগরিকদের ফেরত নিয়ে যাক। অবশ্য এতোজন বাস্তুচ্যুত মানুষ, যারা নির্যাতিত হয়েছিল, তাদের আশ্রয় দেওয়ায় সারা বিশ্ব আমাদের প্রশংসা করেছে, সাধুবাদ জানাচ্ছেন ।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক গ্রামে শহরের সুবিধা নিশ্চিত করতে চাই। আমরা দেখতে চাই ২১০০ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে। সেজন্য ডেল্টা প্ল্যান করেছি। যাতে আমাদের এই ব-দ্বীপ জলবায়ুর পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়। চিরদিন হয়তো আমরা থাকবো না। তারপরও পরিকল্পনা করে দিয়ে যাচ্ছি। যাতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম উন্নত জীবন পায়।
এরপরে প্রতিষ্ঠানের কমান্ড্যান্টকে তাঁর পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সনদপত্র প্রদানের অনুমতি প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।