‘দশটা হোন্ডা বিশটা গুণ্ডা নির্বাচন ঠান্ডা’ সেই এখন পদ্ধতি নেই: শেখ হাসিনা
মোহাম্মদ হাসানঃ এখন আর সেই ‘দশটা হোন্ডা বিশটা গুণ্ডা নির্বাচন ঠান্ডা’ সেই পদ্ধতি নেই। আমরা এখন ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দিচ্ছি, সকল মানুষ এখন আন্তরিকভাবে ভোট দিচ্ছে, সেখানে ভোট কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। যার যার ভোট সে নিলজে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ২ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে শীতকালীন অধিবেশনের সমাপ্তি ও প্রেসিডেন্টের ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি সমাপ্তি ভাষণে এমন মন্তব্য করেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যতই বক্তব্য দেক, যত কথাই বলুক, এই ধরনের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি যখন একটা দলের নেতৃত্বে তাদের ওপর মানুষের আস্থা থাকে না, বিশ্বাস থাকে না। কাজেই সেই বিশ্বাস ও আস্থা যাদের নাই ধীরে ধীরে জনগণ এখন তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। যেহেতু আওয়ামী লীগের কাছ থেকে তারা আস্থা ও বিশ্বাস পেয়েছে, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, দেশের মানুষের কল্যাণ হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের আস্থা বিশ্বাস আওয়ামী লীগ অর্জন করেছে। যার প্রতিফলন আমরা দেখলাম আমাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে।
শেখ হাসিনা বলেন, তাদের (বিএনপি) এখন নেতৃত্বের অভাব। আমাকে হত্যা চেষ্টার মামলায় যারা সাজাপ্রাপ্ত, তারা যখন কোনো দলের নেতৃত্বে থাকে সেই দল জনগণের কাজ করবে কীভাবে? বিএনপির তো আজকে সেই দশা।
তিনি বলেন, বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে এত কথা অথচ এরকম একটা কাজ নিজস্ব অর্থায়নে করলাম। সেটার প্রশংসা তো দিতেই পারল না। উল্টো বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিল জোড়া তালি দিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে। জোড়া তালি দিয়ে পদ্মা সেতু করা হচ্ছে কেউ উঠবেন না। তাহলে নদীটা পার হবে কিসে মাননীয় স্পিকার। যদি নৌপথে যেতে হয় তাহলে নৌকায় যেতে হবে। উপায় তো নাই।
সংসদ নেতা বলেন, বলেন, সকল দল বা রাজনৈতিক সংগঠনের কিছু নীতির ব্যাপার আছে। ১৯৯৮ সালে বন্যা মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে ঘোষণা দিলাম। তখন বিরোধী দলে ছিল বিএনপি। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না, বিদেশ থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে না। তাদের কাছ থেকে অনেক কথা শুনি, অনেক সমালোচনাও শুনি, অনেক প্রশ্নও তারা করেন। প্রশ্ন করেন, সমালোচনা করেন, জানি না আয়নায় বোধ হয় চেহারাটা ভালো করে দেখন না। আয়না দেখেন, নিশ্চই মেকাআপের জন্য দেখতে হয়। কিন্তু নিজেদের কাজটাকে দেখেন না। যারা একথা বলতে পারে তাদের মানসিকতা কি?
সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা ভাইরাস এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। আরও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করতে পারবে।করোনা ভ্যাকসিনের যখন গবেষণা শুরু হয় তখনই আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলাম কারা কারা গবেষণা করছে আগে থেকে ঠিক করে রাখার। ভ্যাকসিন বাজারে এলেই আমরা কিনবো। এর জন্য আমরা এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে রাখি। যখনই বাজারে আসে তখনই ক্রয় করি। করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে অনেকে কথা বলেছিলেন। আসলে ভ্যাকসিন এসে নিজেই তার উত্তর দিয়েছে। অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আমরা ক্রয় করেছি। এই ভ্যাকসিন নেওয়ার পর খারাপ কোনো রিঅ্যাকশনের কথা শোনা যায়নি। তারপরও আমরা মনিটর করছি। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। এ নিয়ে দেশে প্রশংসা শুনিনি। কিন্তু জাতিসংঘের মহাসচিব প্রশংসা করেছেন।