ভাইকে খুনের দায়ে ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড, মা-বোনের যাবজ্জীবন
চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রবাসীকে গলাকেটে খুনের দায়ে আপন ভাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। একই রায়ে আদালত ওই প্রবাসীর মা ও বোনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অশোক কুমার দত্ত এ রায় দেন।
হত্যাকাণ্ডের শিকার আব্দুস সালাম চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। মৃত্যুদণ্ড দণ্ডিত আসামি মো. আজম আব্দুর রাজ্জাকের আরেক ছেলে। যাবজ্জীবন দণ্ড পেয়েছেন রাজ্জাকের স্ত্রী ফরিদা বেগম ও মেয়ে কামরুন নাহার।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা পিপি লোকমান হোসেন চৌধুরী জানান, ২০০৯ সালের ১৯ অক্টোবর বিদেশ ফেরত আব্দুস সালামকে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে নিজ বাড়িতে তার বাবা-মা, ভাই-বোন মিলে গলাকেটে খুন করে। এ ঘটনায় সালামের স্ত্রী পারভীন আক্তার বাদী হয়ে বোয়ালখালী থানায় আব্দুর রাজ্জাক, আজম, ফরিদা ও কামরুন নাহারকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে, হত্যাকাণ্ডের সাতদিন আগে আব্দুস সালাম দেশে ফেরেন। ঘটনার সকালে আব্দুস সালাম তার বাড়ির সামনে ভেঙে যাওয়া গোয়ালঘর ঠিক করছিলেন। এ সময় আজম, তার বাবা ও মা, বোন বাধা দেয়। দুপুরে সালাম তার স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ভাত খাওয়ার সময় আসামিরা তার ঘরে ঢুকে। সালামকে মাটিতে ফেলে রাজ্জাক মাথা চেপে ধরেন। ফরিদা ও কামরুন নাহার হাত পা চেপে ধরেন আর আজম ছুরি দিয়ে কণ্ঠনালীতে আঘাত করেন। হত্যাকাণ্ডের পরপর আজম ও তার বাবা রাজ্জাক পালিয়ে গেলেও স্থানীয় লোকজন ফরিদা ও কামরুন নাহারকে আটক করে পুলিশে দেন।
এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা পুলিশ তদন্ত করে ২০১০ সালের ৯ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর আদালত অভিযোগ গঠন করে। মামলার ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে।
অতিরিক্ত পিপি লোকমান জানান, দণ্ডিত তিন আসামির প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আসামি আব্দুর রাজ্জাক বিচার চলাকালীন মৃত্যুবরণ করায় রায়ে তাকে অব্যহতি দেওয়া হয়। আরেক আসামি আজম শুরু থেকেই পলাতক আছেন। ফরিদা ও কামরুন নাহার যুক্তিতর্ক শুনানি পর্যন্ত নিয়মিত আদালতে হাজির ছিলেন। তবে রায় ঘোষণার সময় অনুপস্থিত ছিলেন বলে জানান আইনজীবী লোকমান হোসেন।