আজ পহেলা ফাল্গুন: পলাশ শিমুলে লেগেছে রঙের আগুন
মোহাম্মদ হাসানঃ আজ রবিবার পহেলা ফাল্গুনের মন-মাতানো দোলায় দুলে উঠছে পুরো বাংলা-বাঙালি মানুষ-জমিন। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে অন্তরে অন্তরে গেয়ে উঠবে ‘আহা, আজি এ বসন্তে এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়।’
শীতের খোলস থেকে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, নাগলিঙ্গম এখন অলৌকিক স্পর্শে জেগে উঠেছে। পলাশ, শিমুলে লেগেছে আগুন রঙের খেলা। বসন্ত মানেই যৌবনের গান। প্রাণের ভেতর যে প্রাণ আছে, জীবনের ভেতরে আরেক জীবন আছে, আত্মার গহীনে যে রূপ-অরূপের আকাঙ্ক্ষা আছে, জীবন ও প্রকৃতির সমান্তরালে তাকে অনুভব ও উৎসারণের নামই কি বসন্ত?
`ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক আজ বসন্ত…। কিংবা আহা আজি এ বসন্তে কত ফুল ফোঁটে কত বাঁশি বাজে কত পাখি গায়..। কিংবা এতটুকু ছোঁয়া লাগে, এতটুকু কথা শুনি, তাই দিয়ে মনে মনে রচি মম ফাল্গুনী..। কিংবা ফুলের বনে যার পাশে যাই তারেই লাগে ভালো..। কিংবা আমাদের প্রিয় বাউল শাহ আবদুল করিমের `বসন্ত বাতাসে..সই গো বসন্ত বাতাসে, বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে…।`
কবির শঙ্কা থাকলেও এবারও ফুল ফুটেছে। দখিন হাওয়ার গুঞ্জরণও লেগেছে। ফাগুন হাওয়ার দোল লেগেছে বাংলার নিসর্গ প্রকৃতিতে। ফুলে ফুলে রঙিন হয়ে উঠছে প্রকৃতির সবুজ অঙ্গন। মাঘের শেষ দিক থেকেই গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। শীতের খোলসে থাকা কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, নাগলিঙ্কন এখন অলৌকিক স্পর্শে জেগে উঠেছে। মৃদুমন্দ বাতাসে ভেসে আসা ফুলের গন্ধ জানিয়ে দিচ্ছে বসন্ত এসেছে। এবং সত্যি সত্যি সে ঋতুর রাজা।
স্বাগত বসন্ত। স্বাগত বসন্ত। প্রাণ খুলে তাই যেন কবিগুরুর ভাষায় বলা যায়, ‘আহা আজি এ বসন্তে এত ফুল ফোটে/এত বাঁশি বাজে/এত পাখি গায়…।’ এসব অমর পংক্তিমালা আমাদের দেহে-মনে-বোধে-মননে তরঙ্গায়িত হবে বারবার। জীবনে দোলা জাগাবে। মননে ও প্রকৃতিতে জেগে উঠবে মায়ার খেলা প্রাণের খেলা ভালবাসার খেলা। ফাল্গুনের এই ডাকে, বসন্তের এই আবাহনে সাড়া না দিয়ে কি পারা যায়?