চলচিত্র অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান আর নেই!

মোহাম্মদ হাসানঃ একুশে পদক প্রাপ্ত অভিনেতা, পরিচালক, কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপকার ও গল্পকার এটিএম শামসুজ্জামান আর নেই!
রাজধানী ঢাকার সূত্রাপুরের নিজ বাসভবনে শুক্রবার দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তাঁর মেয়ে কোয়েল আহাম্মেদ সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গেলো ১৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে পুরান ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এটিএম শামসুজ্জামানকে। তাঁর অক্সিজেন লেভেল কমে গিয়েছিল। হাসপাতালে ডা. আতাউর রহমান খানের তত্ত্বাবধানে ছিলেন তিনি।
১৯৬৫ সালে অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র আগমন হয় এটিএম শামসুজ্জামানের। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ সিনেমায় খল চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন তিনি। প্রবীণ এ অভিনেতা আজও দর্শকের কাছে নন্দিত।
একাধারে তিনি একজন অভিনেতা, পরিচালক, কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপকার ও গল্পকার। শুরুতে মঞ্চে কাজ করতেন অভিনেতা হিসেবেই। এছাড়া চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন কৌতুক অভিনেতা হিসেবে। এরপর আসেন খল অভিনয়ে। অসংখ্য চলচ্চিত্রে এটিএম শামসুজ্জামানের খল চরিত্রগুলো আজও জীবন্ত।
এটিএম শামসুজ্জামানের ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার ভোলাকোটের বড় বাড়ি আর ঢাকায় থাকতেন দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকার পগোজ স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল, রাজশাহীর লোকনাথ হাই স্কুলে। পগোজ স্কুলে তার বন্ধু ছিল আরেক অভিনেতা প্রবীর মিত্র। ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট হাই স্কুল থেকে। তারপর জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন।
তাঁর পিতা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল এবং শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। মাতা নুরুন্নেসা বেগম। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শামসুজ্জামান ছিলেন সবার বড়।
হাসির ছলে কূটচালে মানুষের ক্ষতি করতে সিনেমার পর্দায় এটিএমের জুড়ি মেলা ভার।
এরপর তিনি ঝুঁকে পড়েন কৌতুক প্রধান চরিত্রের অভিনয়ে। বেশরিভাগ সময়ই তাকে দেখা যেতে লাগলো হাস্যরসের সংলাপে। ধীরে ধীরে তিনি কমেডি চরিত্রে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে গেলেন। সিনেমার পাশাপাশি টিভি নাটক ও টেলিফিল্মেও এটিএম শামসুজ্জামান নতুন করে সারা দেশের মানুষকে বিনোদিত করতে শুরু করেন।