‘১৫ বছরের কম বয়সীর সঙ্গে যৌনসম্পর্কই ধর্ষণ’
ফ্রান্সে পনেরো বছরের কমবয়সী শিশুর সঙ্গে যৌনসম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আর এতে ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের সাজার বিধান রাখা হয়েছে।
দেশটির পার্লামেন্টে সম্প্রতি আইনটি গৃহীত হয়েছে। এতে ফ্রান্সের দণ্ডবিধি অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর মতোই হয়ে যাচ্ছে। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।
আগে ১৫ বছরের কমবয়সীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে সম্মতির প্রয়োজন ছিল। অর্থাৎ এই বয়সী কারো সঙ্গে যৌনসম্পর্ককে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করতে হলে ‘সম্মতি ছিল না’ বলে প্রমাণ করতে হত।
কিন্তু নতুন আইন অনুসারে এখন যৌন সম্মতি থাকলেও তা রীতিমতো ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) ইউরোপীয় দেশটির বিচার বিষয়কমন্ত্রী এরিক ডুপন্ড-মোরেত্তেই বলেন, “আমাদের শিশু ও সমাজের জন্য এটি এক ঐতিহাসিক আইন। কোনো প্রাপ্তবয়স্ক আগ্রাসনকারী আর দাবি করতে পারবেন না যে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে ১৫ বছরের কমবয়সী শিশুর সম্মতি ছিল।”
জাতীয় পরিষদে সর্বসম্মতিতে আইনটি পাশ হয়েছে বলে খবরে জানিয়েছে।
তবে সম্মতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা। তারা বলছেন, নাবালক ও তার চেয়ে কয়েক বছরের বড় কারো মধ্যে সম্মতিতে যৌনসম্পর্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধর্ষণে পরিণত হয়ে যাবে।
পরিণতি হিসেবে, নাবালক ও তার চেয়ে পাঁচ বছরের মধ্যে বড় কোনো ব্যক্তির মধ্যে যৌনসম্পর্ককে আইনের ‘রোমিও ও জুলিয়েট’ ধরা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
রোমাঞ্চ ও আকর্ষণের জন্য ফ্রান্সের একটি ভাবমর্যাদা আগে থেকেই তৈরি আছে। ক্ষমতার উঁচু স্তর ও সেলিব্রেটিদের মধ্যে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি এতদিন এতটা গুরুত্ব দিয়ে শনাক্ত হয়নি।
২০১৭ সালে মার্কিন চলচ্চিত্র প্রযোজক হার্ভি ওয়েস্টিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন বহু নারী। এরপর থেকেই বিশ্বজুড়ে ‘হ্যাশট্যাগ মিটু’ আন্দোলন শুরু হয়।
পরে ফ্রান্সেও সেই ধাক্কা লাগে। সেখানে ২০২০ সালে লেখক গ্যাবরিয়েল ম্যাটসনেফ নিজের শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষণ নিয়ে প্রকাশ্যে লিখলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।
যৌন হয়রানি রোধে ফ্রান্সের আইন আগে থেকেই কঠোর। ২০১৮ সালে যৌন হয়রানি বেআইনি ঘোষণা করে আইন পাশ করা হয়েছে।