শোকের মাস আগষ্ট
মোহাম্মদ হাসান: আজ থেকে শুরু হলো শোকের মাস আগস্ট। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এ মাসের ১৫ তারিখে সপরিবারে হত্যা করে ঘাতকচক্র। এ দিনটি মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কালিমালিপ্ত বেদনাবিধুর এক শোকের দিন। ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট নরপিশাচরূপী খুনিরা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন জারি করেছিল।
সেদিন ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম এই হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী, মহিয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভ্রাতা শেখ আবু নাসের, জাতির জনকের জ্যেষ্ঠপুত্র মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, কনিষ্ঠপুত্র নিষ্পাপ শিশু শেখ রাসেল শিকার হন।
আবার এ শোকের মাসেই আরেকটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনার জন্ম হয়। ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়। ওই হামলার টার্গেট ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
প্রতি বছর আগস্ট মাস জুড়ে শোকের নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। কিন্তু এবার করোনার কারণে ব্যাপক জনসমাগম এড়িয়ে চলতে চাইছে দলটি। আর এ কারণেই আগস্ট মাসের সব কর্মসূচি স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রেখে পালনের প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। কর্মসূচিতেও আনা হয়েছে কাঁটছাট।
বরাবরই এই দিনটিতে দলের নানা আয়োজন থাকে দেশ জুড়ে, যাতে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণ থাকে। তবে করোনাভাইরাসের বিস্তারের কারণে চলাচলে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি বারণ আছে জমায়েতেও।
এই মাসে আওয়ামী লীগের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিবস হলো ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস। ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আওয়ামী লীগের ২৪ নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ অন্তত ৩০০ জন। এরপর থেকেই প্রতি বছর দিনটি পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।
এ দুটি দিন ছাড়াও ৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালের জন্মদিন। আর ৮ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন। ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের পাশাপাশি এ দুটি দিবসেও বরাবরই বেশ বড় জনসমাবেশ হয়। তবে এ বছর করোনার কারণে তা নিরুৎসাহিত করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও শোকের মাস শুরু হবে রক্তদান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে। ১ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর সংলগ্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত হবে এ রক্তদান কর্মসূচি। আয়োজন করবে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগ। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন।
তবে করনোর কারণে এবার ব্যাপক সভা-সমাবেশ করা হবে না। ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে আলোচনা সভাগুলো আয়োজন করবে আওয়ামী লীগ।