বিশ্বে চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদের মাটি স্পর্শ করল ভারত
সফলভাবে চাঁদের মাটি স্পর্শ করল ভারতের চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম। ভারতের স্থানীয় সময় বুধবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা চার মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটি স্পর্শ করে মহাকাশযানটির বিশেষ অংশ ল্যান্ডার বিক্রম। চতুর্থ দেশ হিসেবে এবার পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের মাটি স্পর্শের গৌরব অর্জন করেছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন এই মহান কৃতিত্বের মালিক ছিল। খবর এনডিটিভি।
এর আগে, ভারতের চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডারটি চাঁদে নামার সময় বিধ্বস্ত হয়। সোমবার চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার মডিউল `বিক্রম` সফলভাবে যোগাযোগ স্থাপন করে উত্তরসূরী চন্দ্রযান-২ এর অরবিটারের সঙ্গে। চন্দ্রযান-২ বিধ্বস্ত হয়ে গেলেও এখনও তার অরবিটার পদক্ষিণ করছে চাঁদকে। আগের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার তাই বিক্রমে অনেকগুলো অতি শক্তিশালী সেন্সর লাগানো হয়। এমনকি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সেন্সর যদি কাজ নাও করে, তারপরেও ঠিকভাবে চাঁদে নামতে পারবে বিক্রম।
ইসরোর ওয়েবসাইটসহ সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবের পেজে পাঁচটা ২০ মিনিট থেকে চাঁদে নামার সরাসরি সম্প্রচার শুরু করে। কোটি ভারতীয়সহ বিশ্বের লাখো কোটি মানুষ উপভোগ করে এই মুহূর্তটি। এই মহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী হতে স্কুলগুলোও এ সময় খোলা রাখা হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলন থেকেই চন্দ্রযান-৩ এর চাঁদে নামার দৃশ্যটি উপভোগ করেন।
ভারতের এই চন্দ্রাভিযান সফল হলে এই প্রথম কোনও দেশের মহাকাশযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামবে। এতে তৈরি হবে ইতিহাস। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীনের পর ভারতও চাঁদে মহাকাশযান পাঠানোর ক্ষেত্রে সফল হবে।
কয়েকদিন আগে রুশ চন্দ্রযান লুনা-২৫ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামতে গিয়ে ভেঙে পড়েছে। যেকোন রকমের বিপর্যয় এড়াতে ইসরো এবার অনেক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। বিক্রমের চাঁদে নামার মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী হয়ে রইলেন কোটি কোটি মানুষ।
বিক্রমের সফল অবতরণের পর এবার এর সঙ্গে যুক্ত বিশেষ যান রোভার প্রজ্ঞা কাজ শুরু করেছে। এটি পরবর্তী ১৪ দিন চাঁদের বুকে ঘুরে বেড়াবে। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠাবে ইসরোতে। সৌরশক্তির সাহায্যে এটি কাজ করছে। পৃথিবীর হিসাবে চাঁদের মাস হয় ২৮ দিনে। সেখানে ১৪ দিন রাত, আবার ১৪ দিন সূর্যের আলো থাকে। বুধবার থেকে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ১৪ দিন ধরে সূর্যের আলো থাকবে। তাই এই সময়কেই অবতরণের জন্য বেছে নিয়েছে ইসরোর বিজ্ঞানীরা।