কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিভক্ত কেন?
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের আন্দোলন স্থগিত করতে রাজি নয় শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। গতকাল বিকেলে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আন্দোলনের ২০ জন প্রতিনিধির আলোচনা হয়। তারপর মে মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত স্থগিত করা হয় আন্দোলন। যোগাযোগ মন্ত্রী সরকারের পক্ষ থেকে কোটা ব্যবস্থার পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এক মাসের সময় চাইলে এই সিদ্ধান্ত আসে।
তবে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্তে কেন দ্বিধা বিভক্তির সৃষ্টি হলো? আন্দোলন স্থগিত করার বিপক্ষের অংশটি সোমবার রাতেই একটি কমিটি গঠন করেছেন।
সমঝোতা বিরোধী একজনের মতে, ‘আন্দোলন একমাস পরে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে এই আন্দোলনটাকে দমিয়ে দেওয়া। এটা সরকারের একটা চাল কারণ একমাস পরে রোজা চলে আসবে আর তখন ক্যাম্পাসে কেউ থাকবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কোটা নিয়ে গবেষণার কিছু নেই। সবাই জানে জিনিসটা কি। এটা চাইলেই এক রাতের মধ্যে শেষ করা যায়। তাই আমি এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করছি।’
আরেক শিক্ষার্থী বলছেন তাদের বিভক্ত করার জন্যেই এভাবে আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ওই ২০ জন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তারা আমাদের প্রতিনিধি হয়ে শুধু কথা বলতে গিয়েছিল। ওরা এসে আমাদের জানাবে এবং আমরা পরে সিদ্ধান্ত নেবো ব্যাপারটা এরকমই হওয়ার কথা ছিল।’
এমন অবস্থায় কোটা ব্যবস্থা সংস্কারে আন্দোলন পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ সুমন কবির বলছেন, ‘আমরা শুরুর দিকে ৭০-৮০ জন ছিলাম। আমরা প্রায় ৩ মাস প্রোগ্রাম করেছি। সরকারের একজন মন্ত্রী বিনীতভাবে সময় চেয়েছেন। আমরা প্রথমে রাজি হইনি। মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন আমাকে কি তোমরা বিশ্বাস করো না? তিনি বলেছেন প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে থাকবে, বিষয়টি জটিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সময় চেয়েছেন তিনি। তাই সেজন্য সেটি আমরা সম্মান করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওইখানে আসলে তারা অনেক আবেগপ্রবণ ছিল। এটাকে আসলে বিভক্তি বলা যাবে না’
বাংলাদেশে এখন সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী কোটা ১০ শতাংশ, জেলা কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত ৫ শতাংশ। এছাড়া প্রতিবন্ধীদের জন্য এক শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৫৬ শতাংশ। সংস্কারপন্থীদের দাবি এই কোটাকে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। তবে আন্দোলনকারীদের মধ্যে এমন মত বিরোধে অবস্থা কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা কেউই বলতে পারছে না।