এতিমের টাকা আত্মসাৎ
এতিমদের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা গিলে খাচ্ছে মাদ্রাসা !
মোহাম্মদ হাসানঃ এতিমশূন্য ও বন্ধ থাকা এতিমখানার নামে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত অর্থ উত্তোলন করে আত্ম’সাতের অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভেলাজান আনছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ্ বোর্ডিংয়ের পরিচালনা কমিটির বিরু’দ্ধে।
আর ওই পরিচালনা কমিটিতে স্থানীয় প্র’ভাবশালীরা থাকায় বিষয়টি জেনেও ভয়ে কেউ প্র’তিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।
যদিও এতিমের হক আদায়ের বিষয়টিতে ইসলাম অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। এতিমের সম্পদে অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগকারীদের জন্য ভীষণ শাস্তির হুমকি দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় যারা এতিমদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে তারা তো তাদের পেটে আগুন ঢুকাচ্ছে, আর অচিরেই তারা প্রজ্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে। (সূরা নিসা : ১০)
কিন্তু “চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনি” এ উক্তির যতার্থতা প্রমানে সংবাদ কর্মীরা সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পায়, ঠাকুরগাঁও উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে ভেলাজান আনছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংটি বন্ধ রয়েছে। সেখানে দীর্ঘ দিন ধরে কোনো এতিম থাকছে না। তালা দেয়া রয়েছে বোডিংয়ের কক্ষগুলো। এতিমখানা পরিচালনা কমিটি কোন খুঁটির জোরে বন্ধ এতিমখানার বরাদ্দ পাচ্ছে এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
নাম প্রকাশে আগ্রহী নন, এমন শর্তে স্থানীয়রা জানান, ভেলাজান আনছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংটি ২০১৭ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে। অথচ বন্ধ এতিমখানার ১৫ এতিমের নামে আসা বরাদ্দকৃত অর্থ ভাগ করে খাচ্ছে পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। পরে তারা বিষয়টি সমাজসেবা অফিসে গিয়ে কর্মকর্তাদের অবগত করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সমাজসেবা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি বলে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ।
দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ থাকার বিষয়টি অ’স্বীকার করে ভেলাজান আনছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ্ বোর্ডিংয়ের পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন জানান, গত জুন মাসে ১৫ জনের বরাদ্দকৃত ৯০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাঈয়েদা সুলতানা গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, বোর্ডিংটির বিষয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। বর্তমানে বোর্ডিংটি কী অবস্থায় আছে, সেটা জানতে পরিদর্শন করা হবে এবং অর্থ আত্ম’সাতের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, এতিমদের বরাদ্দের টাকা আত্ম’সাৎ করা গুরুতর অপরাধ। বিষয়টি তিনি অবগত হওয়ার পর তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তাদের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। খুব শিগগির তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।