কোভিড-১৯ হয়তো নিঃশেষ হবে না – WHO
প্রায় অর্ধ কোটি আক্রান্ত আর তিন লাখের মতো মৃত্যুর পর বিশ্ববাসী যখন কোভিড-১৯ মহামারীর কোথায় শেষ জানতে উদগ্রীব, তখন হতাশার খবর দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সংস্থার বিশেষজ্ঞ মাইক রায়ান বলেছেন, কোভিড-১৯ হয়ত বিশ্ব থেকে কখনও নির্মূল হবে না।
বুধবার জেনিভায় সংস্থার নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে তার এই হতাশাজনক বক্তব্য আসে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের দৈনিক গার্ডিয়ান।
রায়ান বলেন, “আমার মনে হয়, আমাদের এক্ষেত্রে বাস্তবতা উপলব্ধি করাটা গুরুত্বপূর্ণ। এই মহামারীর শেষ কোথায়, এটা কেউ বলতে পারবে বলে আমার মনে হয় না।
“এক্ষেত্রে কোনো দিনক্ষণ নেই, কেউ আশা দিতে পারবে না। এটা আমাদের জন্য দীর্ঘ সমস্যা হিসেবে রয়ে যাবে, হয়ত কখনও নেই হয়ে যাবে না।”
বিশেষজ্ঞ মাইক রায়ান (ফাইল ছবি)
পাঁচ মাস আগে চীনের উহানে নতুন এক করোনাভাইরাস মানবদেহে সংক্রমণ ঘটার পর এই মহামারীর সূত্রপাত।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির বুধবার রাতে হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৮৮ দেশ ও অঞ্চলে ৪৩ লাখ ১৩ হাজার মানুষের দেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু ঘটেছে ২ লাখ ৯৪ হাজারের।
ছোঁয়াচে এই রোগের বিস্তার ঠেকাতে প্রায় গোটা পৃথিবী লকডাউনে যাওয়ায় বিশ্বের অর্থনীতি এখন বিপর্যস্ত। প্রায় এক শতক পর আবার ভয়াবহ মন্দার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে টিকা আবিষ্কার করে মহামারী ঠেকানোর আশাবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। নানা দেশে প্রায় ১০০টি টিকা ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে, অনেকগুলোর পরীক্ষামূলক প্রয়োগও শুরু হয়েছে।
তবে তাতেও ততটা আশাবাদী নন ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞ রায়ান।
তার যুক্তি হামেরও তো টিকা আবিষ্কার হয়েছে, দেওয়াও হচ্ছে, তাতে তো হাম নির্মূল হয়নি।
কী হবে, যদি করোনাভাইরাসের টিকা তৈরি না হয়?
এইডসেরও এখনও কার্যকর টিকা আবিষ্কার হয়নি বলে তা রয়েই গেছে বিশ্বে। তেমন হলে নতুন করোনাভাইরাসকে সঙ্গী করেই বাঁচার পথ খুঁজতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস বলেছেন, এই মহামারী আটকানোর দায়িত্ব এখন বিশ্বের প্রতিটি মানুষের। এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে হবে প্রত্যেককে।
মাইক রায়ান বলেন, এই রোগের ঝুঁকি হ্রাসে জাতীয়, আঞ্চলিক, বৈশ্বিক পর্যায়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বিশ্ব নার্স দিবসের কর্মসূচিতে চীনের নার্সরা। ছবি রয়টার্স
মাসখানেকের লকডাউন শেষে যখন বিভিন্ন দেশ জীবনযাত্রা স্বাভাবিকের পথে হাঁটছে, তাও ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে আসছেন।
হাঁপিয়ে তোলা ‘লকডাউন’ যেভাবে উঠছে ইউরোপে
রায়ান মনে করেন,বিমান পথে খুলে দেওয়ার চেয়ে স্থল সীমান্ত খুলে দেওয়াটা কম ঝুঁকিপূর্ণ।
তবে কোনো কিছুতেই তাড়াহুড়ো না করার পরামর্শ দিয়েছেন ডব্লিউএইচওর আরেক বিশেষজ্ঞ মারিয়া ফন কার্শভ।
“আমাদের এটা ভাবনায় আনতে হবে যে এই মহামারী থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লাগবে,” বলেন তিনি।