দেশে গত একদিনে করোনায় আরও ৩৯জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৩৯৪৬
মোহাম্মদ হাসানঃ বৈশ্বিক মহামারী করোনার এই বিধ্বস্থ সময়েও মিলছে আশার খবর। করোনা সংক্রমণ যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে সুস্থতার হারও। দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় সুস্থ হয়েছেন ৫১ হাজার ৪৯৫ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় দেশে প্রাণঘাতী করোনায় প্রাণহানি ঘটলো আরও ৩৯ জনের প্রাণ। যার হাত ধরে দেশে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৬২১ জন।নতুন শনাক্ত ৩৯৪৬ জন সহ দেশে এই মুহুর্তে শনাক্ত এক লাখ ২৬ হাজার ৬০৬ জন। তবে আশার কথা হলো গত ২৪ ঘন্টায় ১৮২৯ জন সহ মোট ৫১ হাজার ৪৯৫ জন সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন।
আজ ২৫ জুন বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর মহাখালিস্থ স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে ৬৬ টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ হাজার ৫৮৬ টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৭ হাজার ৯৯৯ টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৪৪৩ টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও ৩ হাজার ৯৪৬ জনের মধ্যে। ফলে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ২৬ হাজার ৬০৬ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৯ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো এক হাজার ৬২১ জনের পাশাপাশি গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন আরও ১৮২৯ জন মোট ৫১ হাজার ৪৯৫ জন।
বুলেটিনে ডা. নাসিমা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২১.৯২ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪০.৬৭ শতাংশ, মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। আজ মৃতদের লিঙ্গ বিভাজনে পুরুষ ৩২ নারী ৭ জন।
এদিকে বিশ্বে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী সপ্তাহেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪ লাখ ৫ হাজার ৮০০ জনে। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৮২ হাজার ১২৮ জনের।
বিশ্বে একক দেশ হিসেবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৮৫৪ জন। আর এতে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ৯৬৯ জনের।
যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ব্রাজিল। আক্রান্ত ও উভয় মৃত্যু উভয় বিবেচনায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১১ লাখ ৮৮ হাজার ৬৩১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৫৩ হাজার ৮৩০ জনের।
মৃত্যু বিবেচনায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্য, তবে আক্রান্তের দিক থেকে দেশটির অবস্থান পাঁচ নম্বরে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৮ হাজার ৩৩৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪৩ হাজার ১৬৫ জনের।
মৃত্যু বিবেচনায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ইউরোপের আরেক দেশ ইতালি, তবে আক্রান্ত বিবেচনায় দেশটির অবস্থান নয় নম্বরে। ইতালিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৩৯ হাজার ৪১০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৪৪ জনের।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হওয়া দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউরোপের আরও দুই দেশ- ফ্রান্স ও স্পেন। মৃত্যু বিবেচনায় পঞ্চম স্থানে থাকা ফ্রান্স আক্রান্ত বিবেচনায় আছে ১১তম স্থানে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৭৩৪ জনের। আর মৃত্যুর দিক থেকে ষষ্ঠ এবং আক্রান্তের দিক থেকে অষ্টম স্থানে থাকা স্পেনে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৩২৭ জনের।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আক্রান্ত বিবেচনায় বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ স্থানে থাকা ভারতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৫৬ হাজার ১৮৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ৪৭৬ জনের।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ১৮৮টি দেশে ছড়িয়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।