বীরপ্রতীক কাকন বিবি আর নেই
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে এই বীরপ্রতীকের মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মাহবুবুল হক জানিয়েছেন।
শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত সোমবার এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শতবর্ষী কাকন বিবি। এর আগে গত বছর জুলাইয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর কয়েকদিন হাসপাতালে ছিলেন তিনি।
কাকন বিবির জন্ম ১৯১৫ সালে বলে জানিয়েছেন তার ভাগ্নে ইনছান আলী। মেঘালয়ের নেত্রাই হাসিয়া পল্লীতে তিনি জন্মেছিলেন বলে সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবু সুফিয়ান জানান।
কাকন বিবির স্বামী সাঈদ আলীও প্রয়াত। তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারবাজার থানার জিরারগাঁও গ্রামে।
১৯৭১ সালে তিন দিন বয়সী মেয়ে সখিনাকে রেখে যুদ্ধে চলে যান কাকন বিবি। জুনে পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে ধরা পড়েন তিনি। বাঙ্কারে আটকে দিনের পর দিন তাকে নির্যাতন করে পাকিস্তানি সেনারা।
ছাড়া পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলীর কাছে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ নেন কাকন বিবি। রহমত আলীর দলে সদস্য হয়ে সশস্ত্র যুদ্ধ করেন তিনি। একইসঙ্গে চালিয়ে যান গুপ্তচরের কাজ।
১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে টেংরাটিলার সম্মুখ যুদ্ধে কয়েকটি গুলি তার শরীরে বিদ্ধ হয়। উরুতে কয়েকটি গুলির দাগ এখনও আছে।
টেংরাটিলা যুদ্ধের পর আমবাড়ি, বাংলাবাজার, টেবলাই, বালিউরা, মহব্বতপুর, বেতুরা, দূরবীণটিলা, আধারটিলাসহ প্রায় নয়টি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন কাকন বিবি।
মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৬ সালে তাকে বীরপ্রতীক উপাধিতে ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার।