দেশে করোনায় গত একদিনে ৪৬ জনের মৃত্যু,নতুন শনাক্ত ৩০২৭ সুস্থ ২৭৩৬
মোহাম্মদ হাসানঃ মারণ রোগ করোনা ভাইরাস কবে যাবে, সেই নিয়ে বিস্তর আলোচনা বিশ্বজুড়ে। কিন্তু এরই মধ্যে খারাপ খবর শোনালেন চিনা গবেষকরা। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, করোনা রোগ যে ভাইরাস বহন করে, সেই ভাইরাস কখনই নির্মূল হবে না। ফ্লুয়ের আকারে এই ভাইরাস সংক্রমিত হবে বারংবার।
আজ ৮ জুলাই বুধবার দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর মহাখালিস্থ স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিদিনের মতো অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে দেশের সর্বশেষ তথ্য জানান অধিদপ্তরটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা।
ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে ৭৫ টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ হাজার ৮৮৩ টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ৬৭২ টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৮ লাখ ৮৯ হাজার ১৫২ টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও ৩ হাজার ৪৮৯ জনের মধ্যে। ফলে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৭২ হাজার ১৩৪ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪৬ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো দুই হাজার ১৯৭ জনের পাশাপাশি গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও ২৭৩৬ জন মোট ৮০ হাজার ৮৩৮ জন।
বুলেটিনে ডা. নাসিমা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২২.২৬ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৬.৯৬ শতাংশ, মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। আজ মৃতদের লিঙ্গ বিভাজনে পুরুষ ৩৮ নারী ৮ জন।
এদিকে বিশ্বব্যাপী করোনা শনাক্ত মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ১৯ লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে করোনা নিয়ে আপডেট দেয়া ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার।
বুধবার সকাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক কোটি ১৯ লাখ ৪৯ হাজার ২৮১ জনে। আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬০১ জন। সুস্থ হয়েছেন ৬৮ লাখ ৪৯ হাজার ৫৪৫ জন।
এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ২লাখ ৭ হাজার ৭৫২ জন। মারা গেছেন ৫৫১২ জন। আর একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন প্রায় দুই লাখ মানুষ।
চীনের উহানে করোনা সংক্রমণ সৃষ্টি হলেও এখন অদৃশ্য এই ভাইরাসটির বেশি প্রকোপ আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায়। ইউরোপের কিছু দেশেও ফের ভাইরাসটির সংক্রমণ বেড়েছে। নতুন করে আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছে চীন-জাপানেও। ফলে দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছে, অনেকে দেশে করোনার সংক্রমণের মাত্রা মারাত্মক ঊর্ধ্বমুখী। তাই করোনা প্রতিরোধের পদক্ষেপ দ্বিগুণ করতে হবে।
করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে প্রথম অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩০ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮ জন। যুক্তরাষ্ট্রে করোনার আঘাতে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৭২ জনের। করোনায় মোট মৃতের দিক থেকেও প্রথমে রয়েছে দেশটি। দেশটিতে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৩ লাখ ৫৪ হাজার ৮৬৩ জন।
করোনায় আক্রান্তের থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৬ লাখ ৭৪ হাজার ৬৫৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৬৬ হাজার ৮৬৮ জনের। আর এ পর্যন্ত ব্রাজিলে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১০ লাখ ৭২ হাজার ২১৯ জন।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ২১৫ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে কভিড-১৯। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।