প্রাণের ৭১

লাদাখে চীনের ৪০ হাজার সেনা

সাকিবঃ চীন কথা রাখেনি। পূর্ব লাদাখের একাধিক জায়গা থেকে তারা সরে যায়নি। ফলে ভারতও লাদাখে মোতায়েন করা অতিরিক্ত তিন ডিভিশন সেনা সরিয়ে নিচ্ছে না।

গালওয়ান উপত্যকার হট স্প্রিং ও ফিঙ্গার ৪ ছেড়ে চীনের সেনা পিছু হটলেও ডেপসাং, গোগরা ও প্যাংগং লেকের ফিঙ্গার ৫-এ এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। এই জায়গাগুলো থেকে সরে যাওয়ার কোনো ইঙ্গিত চীন এখনো দেয়নি। সরকারি সূত্র এই খবর জানিয়েছে এনডিটিভিকে।

সূত্রমতে, ১৪ ও ১৫ জুলাই দুই দেশের সেনা পর্যায়ের শেষ আলোচনায় ঠিক হয়েছিল ফিঙ্গার ৫ থেকে চীনের সেনারা ফিঙ্গার ৮-এ সরে যাবে। দুই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার মধ্যে বৈঠকেও উত্তেজনা প্রশমনে পিছিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু সেই বোঝাপড়া সত্ত্বেও চীন এখনো অনড়। ফিঙ্গার ৫-এ তারা ‘অবজারভেশন পোস্ট’ তৈরি করতে চায়।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র এএনআই সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, লাদাখের উপদ্রুত এলাকায় এখনো চীনের ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে। সেনারা সশস্ত্রও। রয়েছে দূর পাল্লার কামান ও এয়ার ডিফেন্স ব্যবস্থা। ডেপসাং ও গোগরায় তারা পাকা কাঠামোও তৈরি করেছে। হট স্প্রিংয়ের পিপি-১৭ (দুই দেশের জন্যই টহলদারি এলাকা) থেকেও চীন পুরোপুরি সরেনি। ভারত মনে করছে, বোঝাপড়া সত্ত্বেও চীন তাদের ‘দুই পা এগিয়ে এক পা পেছানো’ নীতি আঁকড়ে রয়েছে। ফলে ভারত এখনো চীনা মতিগতি নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছে না।

তবে চীন সরে গেলেও ভারত লাদাখে বিন্দুমাত্র ঢিলেমি দিতে রাজি নয়। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং লাদাখ গিয়ে সেনা কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, পূর্ব সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা ও পশ্চিম সীমান্তে নিয়ন্ত্রণরেখায় বছরভর একভাবে ভারতীয় বাহিনী সজাগ থাকবে। গত ১৫ জুনের সংঘর্ষের পর লাদাখে অতিরিক্ত ৩ ডিভিশন (প্রতি ডিভিশন অর্থাৎ ন্যূনতম ১০ হাজার) পদাতিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়। সেই বাহিনী প্রত্যাহারের কোনো প্রশ্ন নেই বলে সেনা সূত্রের খবর। বরং, সূত্র অনুযায়ী, বাড়তি সেনা রাখার জন্য দরকারি অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। জম্মু-কাশ্মীরের উধমপুরের নর্দার্ন কমান্ড সেই কাজে ব্যস্ত। আগামী মাস থেকে লাদাখের বিস্তীর্ণ এলাকা প্রবল ঠান্ডায় দুর্গম হয়ে পড়বে। সেই জন্য অবকাঠামো তৈরি থেকে অস্ত্র সম্ভার সহ যাবতীয় রসদ মজুত করা শুরু হয়েছে। পদাতিক বাহিনীর মতো বছরভর সতর্ক রাখা হচ্ছে বায়ু সেনাদেরও।

ভারতের চীন নীতি নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীকে নতুন আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। দুই মিনিটের এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শুধু নিজের ভাবমূর্তি তৈরিতে ১০০ শতাংশ মনোযোগী। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও সেই তাঁবেদারি করে যাচ্ছে। অথচ বোঝা উচিত, ব্যক্তির ভাবমূর্তি কখনোই জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গির বিকল্প হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি রাহুলের পরামর্শ, চীনের মোকাবিলা মানসিক শক্তি দিয়ে করতে হবে। কঠোর অবস্থানে থাকলেই একমাত্র সেই মোকাবিলা সম্ভব। দুর্বলতা ধরা পড়ে গেলে পারবেন না। রাহুল বলেন, শুধুমাত্র জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গি থাকলে হবে না। দরকার আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির। দুঃখের বিষয়, আমরা দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা করছি না। বড় স্বপ্ন দেখছি না। উল্টে নিজেরাই নিজেদের সঙ্গে লড়াই করে চলেছি।

সাকিব মোহাম্মাদ

উপসম্পাদক প্রানের৭১ নিউজ।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*