চট্টগ্রামের পাহাড়তলী দেশের সর্ববৃহৎ বধ্যভূমির জমি দখল করে নিচ্ছে প্রভাশালীরা
মোহাম্মদ হাসানঃ দেশের সর্ববৃহৎ বধ্যভূমি বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পাহাড়তলী। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ফয়’স লেকের এ বধ্যভূমির শুধু একটি গর্ত থেকেই উদ্ধার করা হয় প্রায় ১১০০ মাথার খুলি। ’৭১-এর এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এখানে প্রায় ২৫/৩০ হাজার বাঙালিকে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা হত্যা করেছে।
নগরীর পাহাড়তলী মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বধ্যভূমির জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে । মহলটি বধ্যভূমির সীমানা ভেঙ্গে রাস্তা নির্মাণের মাধ্যমে বধ্যভূমির জমি দখলের পাঁয়তারা করছে যার মাধ্যমে বধ্যভূমির বাকি জায়গাগুলোও সরকারের হাত ছাড়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। ইতোমধ্যে এই বধ্যভূমির বিরাট অংশ একটি প্রভাবশালী মহল দখল করে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
ইতিমধ্যে পাহাড়তলী বধ্যভূমির বাম পার্শ্বের সীমানা ভেঙ্গে ও গাছ কেটে চলাচলের জন্য সড়ক করা হয়েছে। রাস্তার সম্মুখভাগে লোহার গিরিল দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক দিন আগেও এই রাস্তা ছিল না। হঠাৎ করে গাছ কেটে কে বা কারা রাস্তাটি করেছে।
এ দিকে, প্রভাবশালী মহল কর্তৃক পাহাড়লী বধ্যভূমির জমি দখলের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন চট্টগ্রামের কয়েক জন সংস্কৃতি কর্মী।
সাংবাদিক ও নাট্যকার প্রদীপ দেওয়ানজী রচিত ‘ইউএসটিসি বধ্যভূমি’ নাটকের নির্দেশক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নাট্যকলা বিভাগের অতিথি শিক্ষক মোস্তফা কামাল যাত্রা সমাজ মাধ্যম ফেসবুকে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
২৪ জানুয়ারি রবিবার দুপুরে ফেসবুকে যাত্রা লিখেছেন, ‘পাহাড়তলী বধ্যভূমি এর জমি দখল! বাম পার্শ্বের সীমানা ভেঙ্গে; গাছ কেটে সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে সফলভাবে পাহাড়তলী বধৌভূমির জমি দখল। ইতিপূর্বে ডান পার্শ্বে ‘জিয়া বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন ভবন’ তুলে জমি দখলের কোন কার্যকর প্রতিবাদ না হওয়ার চূড়ান্ত পরিণতি। হায় চট্টগ্রামবাসী………..’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস্ সাধারণ নাগরিক, মুক্তিযোদ্ধা, বুদ্ধিজীবী, সরকারি-বেসরকারি চাকুরীজীবী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ধরে নিয়ে হত্যার জন্য কিছু নির্দিষ্ট স্থানকে ব্যবহার করতো, যেগুলো পরবর্তী বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।