বাস্তবতা ফিরে আসে দুঃস্বপ্ন হয়ে – মোঃ শামসুল আরিফ
একটি গা শিউরে উঠা বাস্তবতা দুঃস্বপ্ন হয়ে ফিরে আসে বার বার।
আজ সকাল( শুক্রবার ২৩শে এপ্রিল) সময় সকাল ৯ঃ৩২ একটি ভয়ংকর দুঃসপ্নে ঘুম ভাঙ্গছে। এই খারাপ সপ্নটি আমি প্রায় সময় দেখি শুধু সপ্নের স্থান পরিবর্তন করে।
কখনো দেখি লব্বা চাপাতি দিয়ে দুজন মোখশ পরা লোক আমাকে হঠাৎ করে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে পালিয়ে গেছে। কখনো দেখি ধাক্কা দিয়ে পাহাড় থেকে, উচু বিল্ডিং, মেট্রোর ইলেকট্রনিক লাইকে ফেলে দিছে হত্যার উদ্দেশ্যে। প্রতিবারে সপ্ন ভাঙার পর কিছুক্ষণ ভয়ে গায়ের পশম দাঁড়িয়ে যায়,আতঙ্কিত বোধ করি।
আজ দেখলাম সপ্নে দেশে চলে গেছি, বাড়ীর সামনে হাঁটতেছি। এমন সময় ১০/১৫ জন কালো পোশাক মুখ ডাকা লোক আধুনিক অস্র ও ধারালো চুরি হাতে নিয়ে হঠাৎ করে এসে এলাকার নারী পুরুষ শিশু সহ অনেককে জনকে ঘিরে ধরছে, আমি তা দেখে ভয়ে পাশে দোঁড়। দিয়ে একটি বাড়ীর সিঁড়ির নিচে আশ্রয় নিয়ে আতঙ্কিত ভীত দিশাহীন হয়ে বসে আছি এবং শুনতে পাচ্ছি বন্দুকের আওয়াজ ও আত্বচিৎকার। এমন সময় দুজন লোক হাতে হাতুড়ি নিয়ে বিল্ডিং টিতে মানুষ খুঁজতে আসে, তারা তন্ন তন্ন করে পুরো বিল্ডিং খোঁজার পর সিড়ির কাছে আসলে আমার সামনে থাকা সিমেন্টের বস্তা সরিয়ে আমার সাথে তাদের দেখা হয়ে যায়, তারা দুজন লোকের মধ্যে একজন আমার এলাকার ছেলে।দেখা মাত্র চিন্তা হয় তারা কি আমাকে মারতে আসছে নাকি রক্ষা করতে আসছে। সাথে সাথে ঘুমটা ভেঙ্গে যায়।
ঘটনা বড় হলেও সপ্নটির দৈর্ঘ্য ছিল ৩০ সেকেন্ডের মতো,বিজ্ঞানীদের মতে সপ্নের ঘটনা যত লম্বা হোক না কেন তার দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ২ মিনিট।
এখন বাস্তবে আসা যাক। প্রতিবারে সপ্নগুলোকে আমি বিশ্লেষণ করার চেস্টা করি। কেন এমন হয়।
পেছনে ফিরে তাকায় ২০১৫ইং ২৮শে এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন বিকেল বেলা চট্টগ্রাম সিটি গেইটের সামনে SA টিভিতে লাইভ শোতে নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেলাম এমন সময় হাতে চাপাতি, দা, চুরি, রড নিয়ে একদল লোক আমাদের উপর হামলা করে হত্যার উদ্দেশ্যে এমন সময় তাদের হাত থে বাঁচার জন্য দোঁড়ে পালিয়ে এসে ৩০০ মিটার দূরে একটি ৫তলা বিল্ডিং ছাদে উঠে যায়, উগ্রবাদী গুলো তখন গেটে লোকার রড দিয়ে গেটে বিল্ডিং টিতে আঘাত করতে থাকে। আওয়াজ আসছিল উপর পর্যন্ত। এর পর তারা গেটের তালা ভেঙে উপরে উঠতে থাকে। এরপর আমি ৫তলার বিল্ডিং ছাদ থেকে লাপ দিয়ে জোড়া লাগানো পাশের ৪ তলা বিল্ডিংয়ে লাপ দিয়ে নামি, এর পর বিল্ডিং এর ৩য় তলাতে আশ্রয় নিয়। তখন আক্রমনকারী গুলো বিল্ডিং এর সকল ফ্লাট তল্লাশি করছিল আমাদের খোঁজে। কাকতালীয় ভাবে যে অপরিচিত বাসায় আশ্রয় নিয়ে ছিলাম তাদের বাড়ী ছিল মিরসরাই। ঘন্টা খানেক পর আমাদের লোকজন আসলে সন্ত্রাসী গুলো পালিয়ে যায়। আমরা আশ্রয় দেওয়া পরিবারটিকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে সেখান থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসি এরপর হাসপাতালে চেকআপ চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে যায়। মৃত্যুর মুখ থেকে পিরে আসার আতঙ্কের দিনটির কথা বারবার মনে আসে। বিশেষ করে আমার পেছনে চাপাতি ও রড হাতে দোঁড়ানো উগ্রবাদী গুলোর কথা মনে হলে এখনো আতঙ্কিত হয়।
এছাড়া অনলাইনে প্রায় সময় শুনতে হয় উগ্রবাদীদের কাছ থেকে কেটে পেলেবে, পুড়িয়ে পেলবে। গুম করবে ইত্যাদি। অনলাইন পোর্টাল ও সামাজিক মাধ্যমে ধর্মীয় উগ্রবাদী, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লেখালেখির কারনে, উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তির পক্ষ থেকে হুমকি গালাগালির পরিমান বেড়ে গেছে।
বর্তমানে সরকারের বিরুদ্ধে প্রামাণ্য তথ্য দিয়ে বাকস্বাধীনতা বক্তব্য সহজে দেওয়া যায়। অনেকে বাকস্বাধীনতার সুযোগে কুরুচিপূর্ণ বিতর্কিত আক্রমনাত্মক অশ্লীল বক্তব্য অনবরত দিয়ে যাচ্ছে, যা কখনো বাকস্বাধীনতার মধ্যে পড়ে না।
অথচ আমরা প্রামাণ্য তথ্য দিয়ে কোন লেখা, বক্তব্য দিলে আমাদের উপর গালাগাল হামলার হুমকি। আক্রমণ হয়। তখন কি ভন্ড গুলো ব্যাক্তি স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতার কথা ভুলে যায়?
লেখকঃ
Md Shamsul Arif
Paris , France