প্রাণের ৭১

দেশে ব্যাংকের অর্থ চুরি ও খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি চালু করেছে বিএনপি : ড. আব্দুর রাজ্জাক

বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকারের সময় ব্যাংকের টাকা চুরি ও খেলাপী ঋণের সংস্কৃতি চালু হয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি।
তিনি আজ বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ব্যাংক খাত নিয়ে বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেয়া বক্তব্যের জবাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাই সাঈদ ইস্কান্দার, তার পুত্র তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো এবং তাদের ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ডান্ডি ডায়িং, খাম্বা লিমিটেড ও ওয়ান স্পিনিংসহ ১৫টি প্রতিষ্ঠানের নামে ভূয়া সম্পত্তি দেখিয়ে ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহন করে।’
তিনি বলেন, এমনকি ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই অবৈধ ঋণের সুদ মওকুপ করা হয় এবং পরবর্তীতে ওই ঋণের টাকাও মাফ করা হয়। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর পরিবার ভূয়া সম্পত্তি দেখিয়ে এভাবে ঋণ গ্রহন এবং তা মাফ করার নজির পৃথিবীর কোথাও নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি, আব্দুর রহমান এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, ত্রাণ ও সমাজ কল্যান সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ও উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকার সময় তারেক রহমান, আরাফাত রহমান কোকো ও সাঈদ ইস্কান্দর সহ ৬ জন মেসার্স ইউনিটেক্স এপারেল লিমিটেড নামে ভূয়া কাগজ পত্র দিয়ে ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমান ঋণ নেয়। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুই লাখ টাকায় কেনা জমি, সোয়া কোটি টাকা মূল্য দেখিয়ে আইএফসি ব্যাংক থেকে ৬০ লাখ টাকা ঋণ নেওয়া হয়। এই অভিযোগে মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
ওই মামলার তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় বিচারের জন্য ১৯৯৭ সালের ২৯ জুলাই আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হয়। পরবর্তীতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
ড. রাজ্জাক বলেন, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী এম মোর্শেদ খানের বিরুদ্ধে ভূয়া সম্পত্তি বন্ধক দেখিয়ে ব্যাংক থেকে তিন কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সচিব মোসাদ্দেক আলী ফালু কয়েক বছরের মধ্যে অবৈধভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নামে-বেনামে অবৈধ অর্থ উপার্জন করেন। তিনি বলেন, মোসাদ্দেক আলী ফালু নামে-বেনামে ভূয়া কাগজ দেখিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে জনগণের অর্থ লুটপাট করেছেন এবং রাতারাতি ব্যাংকসহ ১৬টি কোম্পানীর মালিক হয়ে গেছেন।
ড. রাজ্জাক আরো বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াস আল মামুন হাওয়া ভবনের প্রভাব খাটিয়ে ওরিয়েন্টাল ব্যাংক থেকে ৫৯৫ কোটি টাকা লোপাট করেছেন।
তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড এবং বিএনপির অতীত অপকর্ম থেকে জনগনের দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য দলটি মহাসচিব ব্যাংকিং খাত নিয়ে নির্জলা মিথ্যাচার করেছেন। তারা এ খাতে যে অভিযোগ করেছেন তার কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য জানান নি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যে ড. রাজ্জাক বলেন, কারা ও কিভাবে ব্যাংকের টাকা লোপাটের সঙ্গে জড়িত তার সুর্নিদিষ্ট তথ্য দিন। কেউ এ ধরনের কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে না পারলে জনগনের কাছে আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, বিএনপিকে মালয়েশিয়ার নির্বাচন থেকে শিক্ষা গ্রহন করা উচিত। কারণ ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি জামায়াত যে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়েছিল তাতে দেশের মানুষ তাদেরকে প্রত্যাখান করেছে।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ড. মহাথির মোহাম্মদ দীর্ঘ ২২ বছর ক্ষমতায় থেকে দেশকে সেদেশটিকে যেভাবে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন সেভাবেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয় বছরের দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। আর সেজন্যই দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বার বার নির্বাচিত করবে এবং বিএনপিকে আর কখনো তারা ক্ষমতায় আসতে দেবে না।

বাসস






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*