প্রাণের ৭১

মুক্তামনির হাত থেকে বেরোল ৩৮ টি পোকা

ভালো নেই সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবাইশা গ্রামের ১২ বছরের আলোচিত কিশোরী মুক্তামনি। ব্যথার যন্ত্রণায় প্রতিনিয়ত কান্না করছে সে। এলাকায় কেউ কান্না করলে সবাই বুঝতে পারে হয়তো হাতের যন্ত্রণা বেড়েছে মুক্তার। আগের চেয়ে তার হাতটি এখন আরও ফুলে গেছে।

 

১০ দিন আগে হাতের নিচের অংশ নিয়ে জমাট বাঁধা রক্ত বের হওয়া শুরু করে মুক্তার। সেই অংশটি ড্রেসিং করার সময় আঙুল দিয়ে ৩৮টি বড় পোকা বের হয়ে আসে। এসব দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে তার পরিবার।

 

গেল বছরের ২২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর আর তাকে নিয়ে আসা হয়নি ঢাকায়। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন ও ডাক্তার শারমিন সুমির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন মুক্তার বাবা ইব্রাহিম হোসেন।

 

 

 

মুক্তার হাতের অবস্থা খারাপ দেখে ১৫ দিন আগে ডা. সামন্ত লাল সেনের ফোনে কল করেন ইব্রাহিম। এ সময় তিনি মুক্তার দু’টি ছবি পাঠানোর কথা বলেন। পরে ডাক্তার শারমিন সুমির ইমোতে দু’টি ছবি পাঠান ইব্রাহিম হোসেন। ছবি দেখে হাতের অবস্থা খারাপ বলে জানান ডাক্তাররা। তবে পুনরায় ঢাকা যাওয়ার ব্যাপারে কিছু বলেননি তারা।

 

ইব্রাহিম হোসেন বলেন, হাসপাতাল থেকে যে ব্যান্ডেজ করে দেয়া হয়েছে সেটি খোলা যায়। রিলিজ দেয়ার সময় আমাকে বলে দেয়া হয়েছিল মাঝে মধ্যে যেন সেটি খুলে পরিষ্কার করে দেই। যখনই খুলে দেই কিছুক্ষণ পর দেখি হাতটি ফুলে গিয়ে মোটা হয়ে যায়। ওটা না খুলে দিলে হাতটি পচে যাবে।

 

তিনি আরও বলেন, দুই দফায় অপারেশনে হাতটি থেকে যা কিছু অপসারণ করা হয়েছে তা ইতোমধ্যে পূরণ হয়ে গেছে। এখন আরও গন্ধ বেড়েছে। প্রতিনিয়ত রক্ত পড়ছে। পোকা বের হওয়ার পর এলাকার ছেলে-মেয়েরা তার কাছে আর ভয়ে যেতে চায় না।

 

‌‘সম্ভবত মুক্তার এ হাত আর ভালো হবে না। সাংবাদিকরা বিষয়টা প্রচার করার পর ডাক্তাররা অনেক গুরুত্ব দিয়েছে মুক্তাকে। তারা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে। তাদের যে আন্তরিকতার কমতি ছিল না, তা আমি নিজেও দেখেছি। প্রধানমন্ত্রীও মুক্তার ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছেন। মুক্তা ভালো হলে নিয়ে যেতাম প্রধানমন্ত্রীকে দেখাতে। কিন্তু সে তো আর ভালো হবে না, সেটা তার হাত দেখেই বোঝা যাচ্ছে।’

 

তিনি বলেন, আজ (১৫ মে) সন্ধ্যায় ব্যান্ডেজ খুলে দেখলাম তার পুরো হাতটি পচে গেছে। গন্ধ বের হচ্ছে। বাড়িতে থাকা যাচ্ছে না। কান্না করতে করতে মুক্তার বাবা বলেন, ‘আমরা তার (মুক্তার) আশা ছেড়ে দিয়েছি ভাই।’

 

প্রসঙ্গত, ‘লিমফেটিক ম্যালফরমেশন’ নামে এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছে মুক্তামণি। এটি একটি জন্মগত রোগ (কনজিনেটাল ডিজিস)।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*