প্রাণের ৭১

অতিরিক্ত গরমের বছরে কি পরীক্ষার ফল খারাপ হয়

যেসব বছরে বেশি গরম পড়ে, সেসব বছর ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পরীক্ষায় তুলনামূলকভাবে খারাপ ফল করে।
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড এবং আরও বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এক বড় গবেষণা শেষে এই উপসংহারে পৌঁছেছেন।
গবেষকরা বলছেন, উচ্চ তাপমাত্রা এবং স্কুলের খারাপ ফলের মধ্যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ের প্রায় এক কোটি ছাত্র-ছাত্রীর ফল বিশ্লেষণ করা হয় এই গবেষণার জন্য।
এই গবেষণার পর ছাত্র-ছাত্রীদের গরমের সময় স্বস্তি দেয়ার জন্য আরও বেশি করে এয়ারকন্ডিশনিং ব্যবহারের সুপারিশ করা হচ্ছে।
তাপ প্রবাহ
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমের সময় যেসব ছাত্র-ছাত্রীকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে, তারা বরাবরই অভিযোগ করেছে যে, এরকম আবহাওয়ায় তাদের পরীক্ষা দিতে সমস্যা হয়েছে।
কিন্তু হার্ভার্ড, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্ণিয়া লস এঞ্জেলেস (ইউসিএলএ) এবং জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষণায় এই প্রথম এধারণার পক্ষে স্পষ্ট প্রমাণ খুঁজে পেল। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, তাপমাত্রা যত বাড়ে, স্কুলগুলোর পরীক্ষার ফল তত খারাপ হয়।
২০০০ সাল হতে ২০১৪ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন আবহাওয়া অঞ্চলের মাধ্যমিক স্কুলগুলোর পরীক্ষার ফল পর্যালোচনা করেন গবেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকনমিক রিসার্চ’ এই গবেষণার ফল প্রকাশ করেছে।
গবেষণায় দেখা যায়, যেসব বছরে বেশি গরম পড়েছে, সেসব বছর ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষায় খারাপ গ্রেড পেয়েছে। আবার যেসব বছর তুলনামূলকভাবে কম গরম পড়েছে সেসব বছর পরীক্ষা গ্রেড ছিল ভালো।
গবেষণাটি যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরণের জলবায়ু অঞ্চলেই চালানো হয়। উত্তরাঞ্চলের শীতপ্রধান রাজ্যগুলি থেকে শুরু করে দক্ষিণাঞ্চলের উষ্ণ জলবায়ুর রাজ্যগুলি এতে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
গবেষকরা দাবি করছেন, যখন বেশি গরম পড়ে, তখন ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা করতে, ক্লাশে মনোযোগ দিতে এবং স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে হোম ওয়ার্ক করতে অসুবিধা হয়।
তাপমাত্রা যদি দশমিক ৫৫ শতাংশও বাড়ে, তাতেই ছাত্র-ছাত্রীদের শেখার হার কমে যায় এক শতাংশ।
তাপমাত্রা যখন ২১ শতাংশের ওপরে উঠে, তখনই এই পরিবর্তনটা ধরা পড়ে।
তবে যখন তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়, তখন সবচেয়ে মারাত্মক প্রভাব পড়ে পড়াশোনার ওপর।
এয়ারকন্ডিশনিং
গবেষণায় বলা হচ্ছে, মূলত স্বল্প আয়ের এবং জাতিগত সংখ্যালঘু পরিবারের ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনাতেই গরমের কারণে বেশি ব্যাঘাত ঘটে।
দরিদ্ররা এয়ারকন্ডিশনিং এর সুবিধা ততটা পায়না বলেই হয়তো এটা ঘটছে বলে দাবি করা হচ্ছে গবেষণায়।
হার্ভার্ডের কেনেডি স্কুল অব গভর্ণমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক জশুয়া গুডম্যান বলেন, পরীক্ষার ফলে উল্লেখযোগ্য অবনতির জন্য দায়ী হচ্ছে তাপমাত্রা বৃদ্ধি। কারণ এর ফলে পাঠদান এবং হোমওয়ার্কে বিঘ্ন ঘটছে। এরকম আবহাওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীরা মনোযোগ দিতে পারে না, তাদের মন বিক্ষিপ্ত থাকে।
এই গবেষণার ফল থেকে এখন গবেষকরা প্রশ্ন তুলছেন, জলবায়ুর পরিবর্তন এবং বিশ্বের উষ্ণায়নের কি প্রভাব পড়বে পড়াশোনা এবং পরীক্ষার ফলের ওপর ।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*