বিশ্বকাপে সৌদির ম্যাচগুলোতে গ্যালারীতে থাকবে কি আরব ললনারা?
স্পোর্টস্ ডেস্ক :: বোরখা ঢাকা মুখ মাঝে মধ্যে কোনও ফটোগ্রাফারের কেরামতিতে ধরা পড়ে৷ তৈরি হয় দুর্দান্ত কিছু মুহূর্ত৷ তাতেই চমকে যায় দুনিয়া৷ আরব ললনাদের এমন রূপদর্শনের অপেক্ষায় ফুটবলবিশ্ব৷ আর মাত্র ১২ দিন পর আসছে সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত৷ রুশ দেশের মাটিতে যেমন প্রথমবার ফুটবল বিশ্বকাপের চিহ্ন রাখবে সেই সঙ্গে আরও এক ইতিহাস, বিশ্বকাপ ফুটবলের উদ্বোধনী ম্যাচে প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে খেলবে সৌদি আরব৷
রাশিয়ান-অ্যারাবিয়ানদের বল দখলের লড়াইয়ে বড়সড় দৈত্য অবশ্যই কিংবদন্তি গোলরক্ষক লেভ ইয়াসিনের দেশ৷ তাতে কিইবা যায় আসে আরবদের৷ সোল্লাসে মাঠ মাতাতে হাজির থাকবেন কুবেরের খাজানাকে তাচ্ছিল্যের চোখে দেখা শেখরা৷ তাদের যে কেউ দুনিয়ার যে কোনও পার্থিব সুখ অনায়াসে কিনতে পারেন৷ গুঞ্জন উঠেছে, গোটা দুনিয়ার নজর থাকবে আরব মহিলাদের দিকে৷ অদেখা মরু সুন্দরীদের একঝলক দর্শনেই নাকি উদগ্রীব থাকবেন ফুটবলপ্রেমিরা!
বদলে যাচ্ছে সৌদি আরব, সে দেশের সমাজ ব্যবস্থা৷ শিথিল হচ্ছে রক্ষণশীল কড়া আইন৷ এর মূল কারিগর বর্তমান যুবরাজ মহম্মদ বিন সালমান৷ তিনিই আরব মুলুকের ভবিষ্যৎ বাদশা৷ যে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি সরকার তাকে বাস্তবায়িত করতে নেমে পড়েছেন যুবরাজ৷ সেই ধাক্কায় একের পর এক ঝড় তোলা সংবাদ এসেছে আরব থেকে৷ কখনও দুনিয়া উত্তাল হয়েছে এক রাত্রের মধ্যে একাধিক যুবরাজ ও রাজকুমারীকে বন্দি করার সংবাদে৷ কখনও উত্তেজনা ছড়িয়েছে মহিলাদের উপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা সরানোর হুকুমে৷ সেই অর্থে ২০১৭ সাল থেকে একের পর এক ঘটনার কেন্দ্র আরবভূমি৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়া-আমেরিকা শিবিরে বিভক্ত বিশ্বে সৌদি আরব বরাবরই আমেরিকার পক্ষে৷ সুন্নি মুসলিম দেশটির চরম বিরোধিতা করে শিয়াপন্থী ইরান৷ তিক্ততা বেড়েছে ক্রমশ৷ মধ্যপ্রাচ্যের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক গোলযোগে ইরান ও আরব পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বীর ভূমিকা নেওয়ায় মুসলিম বিশ্ব আড়াআড়ি বিভক্ত৷ এতসবের মধ্যে ইসলামিক বিপ্লবের হাত ধরে ইরানে আধুনিকতা প্রবেশ করলেও, সৌদি আরব কিন্তু নিজেকে মুড়ে রেখেছিল রক্ষণশীল আইনে৷ যেমন, প্রকাশ্যে মহিলারা যে কোনও ক্রীড়ানুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারবেন না৷ এছাড়া একা বাইরে বের হওয়ায়, গাড়ি চালানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল৷ সংস্কারমূলক প্রিন্সের হুকুমে শিথিল হয়েছে তেমনই কিছু কড়া নিয়ম৷ তাই দেশীয় দুই ফুটবল ক্লাবের ম্যাচে হাজির থেকেছেন সৌদি মহিলারা৷ বিশ্ব ফুটবলের উঠোনেও ছড়িয়ে পড়ুক এমনই মরু গোলাপের সৌরভ৷ অপেক্ষায় বিশ্ব৷
একনজরে সৌদি আরবের বিশ্বকাপ অভিযান:
১৯৯৪ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে ১২তম স্থান৷ সেই বছরেই চমক দিয়ে এগিয়ে থাকা বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে পরাজিত করে আরবরা৷ গ্রুপ লিগের আরও একটি ম্যাচে ২-১ গোলে মরক্কো পরাজিত হয়৷ ১৯৯৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপে ২৮তম স্থান৷ ২০০২ সালের দক্ষিণ কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপে ৩২তম স্থান৷ ২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপে ২৮তম স্থান৷