মসজিদে হাফেজের ইয়াবার ব্যাবসা,৩৬ হাজার ইয়াবাসহ আটক।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় পেট্রল পাম্পে নামাজ পড়ার স্থানে বসে ইয়াবার চালান হস্তান্তরের সময় আটক হয়েছেন কোরআনের এক হাফেজ। তার দেয়া তথ্যমতে আটক করা হয় আরও ছয়জনকে। জব্দ করা হয়েছে ৩৬ হাজার বড়ি।
পুলিশ বলছে, কেউ সন্দেহ করবে না, এই ভরসায় মসজিদকে ঘিরে এই কারবার চালাতেন ওই হাফেজ। আর ব্যাগে ভরে অন্য একজনকে দেয়া ১৩ হাজার বড়ির পাশাপাশি তার দেয়া তথ্যে একটি ট্রাকের নিচের অংশে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে আনা ১৫ হাজার বড়িও জব্দ করা হয়।
সোমবার রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তর বিভাগের দল এই অভিযান চালায়। এ সময় আটক হন হাফেজ শহীদুল্লাহ। সুরেলা কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াতের জন্যও তার সুনাম ছিল।
আটক অন্য ছয়জন হলেন: স্বপন দত্ত, মাহবুর সরদার, মাহমুদ হোসেন, ইসমাইল হোসেন, কালা হাসান ও বরকত আলী।
ডিবির অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. শাহজাহান ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার গোলাম সাকলাইনের নেতৃত্বে যাত্রাবাড়ী এলাকায় এই অভিযান চলে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, একটি মিনি ট্রাকে করে রাজধানীতে ইয়াবা আসছে এমন খবরে সোমবার সন্ধ্যার পর অভিযানে যান তারা।
সন্ধ্যা থেকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় অবস্থান নেয় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। রাতে খবর আসে যাত্রাবাড়ী থেকে পোস্তগোলার দিকে যেতে একটি সিএনজি পাম্পের কাছে হাত বদল হবে ইয়াবার।
সে অনুযায়ী অবস্থান নেন গোয়েন্দা সদস্যরা। এ সময় এক পাম্পের পাশের নামাজের স্থানে প্রবেশ করেন হাফেজ শহীদুল্লাহ। তার পিছু পিছু আরেকজনকে আসতে দেখে সন্দেহ হয় গোয়েন্দা পুলিশের। অবশেষে সেখান থেকে ইয়াবার হাত বদলের সময় হাতেনাতে আটক হন দুই জন।
শহীদুল্লাহর সঙ্গে আটক স্বপন দত্ত জানান ইয়াবার চালানটি তিনি মাদারীপুর নিতেন। আর শহীদুল্লাহ জানান, স্টেডিয়াম মার্কেট ছাড়াও মোট পাঁচ জায়গায় তিনি ইয়াবা সরবরাহ করতেন।
পরে শহীদুল্লাহর দেয়া তথ্যে যে ট্রাকে টেকনাফ থেকে ইয়াবা নিয়ে আসা হয়েছিল জব্দ করা হয় সেটিও।
পুলিশ বলছে, শহীদুল্লাহ ইয়াবার বড় চালান নিয়ে এর আগেও বেশকবার ঢাকায় এসেছিল। তার কিছু নিয়মিত ক্রেতাও রয়েছে। এখন সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে কড়াকড়ির মাঝেও পুরনো গ্রাহকদের ধরে রাখতেই ইয়াবার এই চালান নিয়ে এসেছেন তিনি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার মশিউর রহমান জানান, হাফেজ শহীদুল্লাহ এক লাখ ইয়াবা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন একেকটি চালানে।
শহীদুল্লাহ বাড়ি টেকনাফে। হাফেজিয়া পাস করার পর তিনি ভারতের দেওবন্দ থেকে দাওরায়ে হাদিস পাস করেন। দ্রুত ধনী হওয়ার বাসনায় সন্দেহ করবে না ভেবে তিনি জড়িয়ে পড়েন ইয়াবার কারবারে।
শহীদুল্লাহর পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে চার জনই কোরআনে হাফেজ বলেও জানায় পুলিশ।
ডিবির অতিরিক্ত সিনিয়র সহকারী কমিশনার গোলাম সাকলাইন বলেন, ‘এই চক্রটি বেশ কিছু দিন ধরে রাজধানীতে মাদক এনে বিক্রি করত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়। রাতেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।’