প্রাণের ৭১

উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে উন্নয়নের যে পরিকল্পনা আমরা গ্রহণ করেছি তা বাস্তবায়ন করে প্রতিটি গ্রামকেই একেকটি নগরে পরিণত করে গ্রামের মানুষকে নগরের সকল সুযোগ-সুবিধা দিতে সক্ষম হবো বলে আমি বিশ্বাস করি।’
তিনি আজ সংসদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক ভাষণে এ সব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজ দেশের মানুষের সেবা করে যাচ্ছে এবং যাবে। যে আস্থা এবং বিশ্বাস বাংলার জনগণ আওয়ামী লীগের ওপর রেখেছে আমরা তার সম্মান দিচ্ছি এবং সম্মান দিয়ে যাবো।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি সম্মানজনক অবস্থানে রয়েছে। বিশ্বের মানুষ এখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে চিনে। এখন আর মানুষ বাংলাদেশকে আগের মতো ঝড়-ঝঞ্ঝা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ হিসেবে চিনে না। বাংলাদেশের নাম শুনলে এখন আর বিশ্বের কোন দেশ দরিদ্র ও অন্যের সাহায্য নিয়ে চলে এমন দেশ মনে করে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিল সে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য সরকার সপ্তম পঞ্চম বার্ষিকী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বিরোধীদলে থাকা অবস্থায় এ পরিকল্পনাগুলো নিয়ে কাজ করা হয়েছে। যার সুফল আজ জাতি পাচ্ছে। যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে একটি মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশ এখন সে অবস্থানে এসেছে।
এ পর্যন্ত বাঙালি জাতির যা অর্জন তা আওয়ামী লীগের মাধ্যমেই এসেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা শুধু স্বাধীনতাই দেননি, এর সাথে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথও তিনি দেখিয়েছেন। একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, আমাদের স্থল সীমানা, সমুদ্র সীমানা ও সংবিধান সব কিছুই তিনি করে দিয়ে গেছেন। দেশের আইন-কানুন, নীতিমালা, যা যা করার দরকার ছিল অর্থাৎ একটি রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সব কিছুই জাতির পিতা করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলে তিনি স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে গেছেন। এটাও ইতিহাসে বিরল ঘটনা। ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির জীবনে একটি কলঙ্কময় দিন। সে দিন জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সাথে তাঁর পরিবারের সব সদস্যকে হত্যা করা হয়। আমি এবং আমার ছোট বোন বিদেশে ছিলাম বলে আমরা বেঁচে যাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার হত্যার পর দেশে ফিরে এসে দলের দায়িত্ব গ্রহণ করে যে আদর্শ, চেতনা ও বিশ্বাস নিয়ে তিনি দেশ স্বাধীন করেছেন, পৃথিবীর বুকে একটি আত্ম-মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি কাজ করে গেছেন। তাঁর লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে ২১ বছর পর সরকার গঠন করে তা বাস্তবায়নে মনোনিবেশ করি। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে মর্যাদা লাভসহ বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক উন্নত। এটা সম্ভব হয়েছে আওয়ামী লীগের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং নীতির কারণে। আওয়ামী লীগ কখনো মুষ্ঠিমেয় মানুষের কথা চিন্তা করেনি, সব সময় গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা তৃণমূল মানুষের কথা মাথায় রেখে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠায় যারা জড়িত ছিলেন বিশেষ করে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক শামসুল হকসহ সকল নেতৃবৃন্দের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি দলের প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত যারা দলের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন তাদের অবদানের কথাও স্মরণ করেন।বাসস






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*