রোহিঙ্গা সমস্যা দ্রুত সমাধানে বেলজিয়াম বাংলাদেশের পাশে আছে ও থাকবে : শিকফ্রেড ব্রেক
বেলজিয়াম হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস এর প্রেসিডেন্ট শিকফ্রেড ব্রেক বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা দ্রুত সমাধানে বেলজিয়াম বাংলাদেশের পাশে আছে ও থাকবে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তার সঙ্গে গতকাল বেলজিয়াম পার্লামেন্টে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে তিনি এ কথা বলেন।
শিকফ্রেড ব্রেক বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাধ্যমে বেলজিয়াম ইতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রাখবে।
সাক্ষাৎকালে তাঁরা বাংলাদেশের আর্থ- সামাজিক উন্নয়ন, কৃষি.শিক্ষা, নারীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। স্পিকার আসেপ সম্মেলন উপলক্ষে বর্তমানে বেলজিয়াম সফরে রয়েছেন।
স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে অর্থনৈতিক ও মানবিক সকল সূচকে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভূতপূর্ব। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত উন্নত দেশে পরিণত হবে। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা।
ড. শিরীন শারমিন বলেন, নারীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নারীর এ অগ্রযাত্রা মাইলফলক হয়ে থাকবে।তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে স্পিকার,সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী, সংসদ উপনেতা ও বিরোধীদলের নেতা সকলেই নারী। জাতীয় সংসদে সর্বমোট ৭৩ জন নারী সংসদ সদস্যের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রশাসনিক,বিচারবিভাগীয় ও সামরিক বাহিনীতে নারীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এছাড়াও ব্যবসা বাণিজ্যেও নারী উদ্যোক্তাদের অবদান আজ দৃশ্যমান। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে নিশ্চিত হয়েছে জেন্ডার সমতা।
তিনি বলেন, ঐতিহ্যগতভাবে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির পাশাপাশি বাংলাদেশে আজ শিল্পভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে উঠেছে। তৈরী পোশাক ও ওষুধ শিল্পসহ তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। বৈষম্য কমিয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূলস্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে কাজ করছে সরকার। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার বেশীরভাগ যুব শ্রেণী। এই যুব শক্তিকে মানবসম্পদে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমন্বিত পরিকল্পণা গ্রহণ করেছেন। বিশেষ করে, শিক্ষা ক্ষেত্রে ও দারিদ্র্য বিমোচনে সরকার সফলতার সঙ্গে কাজ করছে। যেখানে সংসদ সদস্যগণ নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করছেন।
বেলজিয়ামের হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস প্রেসিডেন্ট বলেন, অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যুবসমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ তবে এক্ষেত্রে বেলজিয়ামে প্রবীণ জনগোষ্ঠী অধিক হওয়ায় অর্থনৈতিক উন্নয়নে তা চাপ সৃষ্টি করেছে। এসময় তিনি বাংলাদেশে যুবসমষ্টির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
এসময় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পী এমপি ও বেলজিয়ামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে স্পিকার ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টারী ডেলিগেশন ফর রিলেশনস উইথ কান্ট্রিস অফ সাউথ এশিয়া এর চেয়ার জেন ল্যাম্বার্ট এমইপি এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি জলবায়ু ইস্যূতে পারস্পরিক সহযোগিতা ও অংশিদারিত্বমূলক ভূমিকা পালনে উৎসাহিত করতে এশিয়া-ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টারী পার্টনারশিপ (আসেপ) কে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে বলে এ সময় জেন ল্যাম্বার্ট উল্লেখ করেন।