স্মার্টফোন নিয়ে যত ভুল ধারণা
স্মার্টফোন ছাড়া আমাদের জীবন এখন অচল। দিন দিন এর জনপ্রিয়তা এবং চাহিদা দুটোই বাড়ছে। স্মার্টফোন দিয়ে এখন দৈনন্দিন জীবনের এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা যায়, যার ফলে আমরা এখন এর প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। কিন্তু স্মার্টফোন নিয়ে আমাদের মধ্যে কাজ করে কিছু ভুল ধারণা। এমন ধারণার কারণে অনেক সময়ই পড়তে হয় ঝামেলায়। জেনে নিই কী সেই ভুল ধারণা এবং সঠিকটি কী:
নেটওয়ার্ক সিগন্যাল
মোবাইলে নেটওয়ার্ক সিগন্যাল কেমন তা জানতে প্রথমেই মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকাই আমরা। স্ক্রিনে কতগুলো নেটওয়ার্ক বার দেখা যাচ্ছে সেটা দেখি। কিন্তু এটা সঠিক পদ্ধতি নয়। স্ক্রিনে ভেসে ওঠা নেটওয়ার্ক বার সংখ্যার সঙ্গে মোবাইল সিগন্যাল স্ট্রেনথ-এর কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ বার বেশি হলে সিগন্যাল ভালো এমনটা কিন্তু নয়। নেটওয়ার্ক বার বোঝায় মোবাইলের কতটা কাছে সিগন্যাল টাওয়ার রয়েছে। এই বার হলো হ্যান্ডসেটের শক্তিশালী সিগন্যালের চিহ্ন।
ওভারনাইট চার্জিং
সারা রাত চার্জ দিলে নাকি ফোনের ব্যাটারি খারাপ হয়ে যায়। এই ধারণা আমাদের বেশির ভাগেরই রয়েছে। কিন্তু স্মার্টফোন কিন্তু আসলেই অনেক স্মার্ট। স্মার্টফোনকে এমন ভাবে তৈরি করা হয় যাতে ১০০% হয়ে গেলে অটোমেটিক চার্জ বন্ধ হয়ে যায়। তাই প্রযুক্তিগত সমস্যা না থাকলে ওভারনাইট বা সারারাত চার্জে কোনো ক্ষতি হয়না।
চার্জার
যে কোনো মোবাইল চার্জার দিয়েই আমরা স্মার্টফোনে চার্জ দেই। কিন্তু আমরা জানি না যে এটা একদমই ঠিক নয়। নিয়মিত অন্য চার্জার ব্যবহার করলে মোবাইল ব্যাটারির বড় ক্ষতি হয়।
এইচডি ডিসপ্লে
কোয়াড এইচডি ডিসপ্লে আর ফুল এইচডি ডিসপ্লে— এই দুটোর মধ্যে অনেকেই ভাবেন যে কোয়াড এইচডি ডিসপ্লে বেশি ভালো। ৫ দশমিক ৫ ইঞ্চি স্ক্রিনের মোবাইলে কোয়াড এইচডি ডিসপ্লে-র পিক্সেল ডেনসিটি ৫৩৮ পিপিআই (পিক্সেল পার ইঞ্চি) এবং ফুল এইচডি ডিসপ্লে-র ৪৪০ পিপিআই। কিন্তু বিজ্ঞান বলে, ৩২৬ পিপিআই-য়ের বেশি পিক্সেল ডেনসিটির পার্থক্য মানুষ সেভাবে বুঝতে পারেনা।
ভাইরাস
অনেকেই ভাবেন, আমার ফোন যথেষ্ট ভালোমানের। তাই কোনো ভাইরাস এতে আক্রমণ করবে না। কিন্তু এটা ভুল। যেকোনো সময়ে যেকোনো ভাইরাস ভালো-মন্দ সব ফোনেই আক্রমণ করতে পারে।
কার্যক্ষমতা
মোবাইলের কার্যক্ষমতা বোঝার জন্য আমরা নির্ভর করি এর ‘কোর’ এর ওপর। যত বেশি কোর হবে তত বেশি ক্ষমতা হবে। যেমন ডুয়াল কোরের চেয়ে কোয়াড কোর এবং তার চেয়ে অক্টাকোর বেশি ক্ষমতাশালী বলে মনে করা হয়। প্রযুক্তি অনুযায়ী এটাই ঠিক। প্রসেসরে যত বেশি কোর, তত বেশি মাল্টি টাস্কিংয়ের সুবিধা। ফলে যে কোনও অ্যাপ্লিকেশন ভালো চলার কথা। কিন্তু বেশির ভাগ অ্যাপ্লিকেশন তৈরি হয় সিঙ্গেল কোর বা ডুয়াল কোর প্রসেসরের জন্য। ফলে একাধিক কোর থাকলেও অ্যাপগুলি তা ব্যবহার করতে পারে না। আর তাই বেশি কোরের প্রসেসরযুক্ত অ্যানড্রয়েড ফোনের চেয়ে সিঙ্গেল কোর অ্যাপলের স্পিড বেশি।
সূত্র: আনন্দবাজার