চট্টগ্রামে জোরারগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় ২ মরদেহসহ বিপুল পরিমান গোলাবারুদ উদ্ধার।
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জোরারগঞ্জে একটি ‘জঙ্গি আস্তানা’ ঘিরে র্যাবের অভিযানে দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টায় এ অভিযান শুরু হলে মুহুর্মুহু গোলাগুলি ও বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
র্যাব জানিয়েছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঠিক পাশে জোরারগঞ্জ থানার উত্তর সোনাপাহাড় গ্রামের একটি একতলা বাড়িতে এক নারী জঙ্গিসহ জেএমবির চার সদস্য অবস্থান করছে বলে তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল।
অভিযানে গোলাগুলির কারণে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। ভোরের দিকে ওই বাড়িতে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটনার পর গোলাগুলি বন্ধ হয়ে যায়। পরে নিয়ন্ত্রিতভাবে আবার যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
শুক্রবার সকাল ৯টায় ঢাকা থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল গিয়ে আস্তানায় প্রবেশ করে সব বোমা একটি পরিত্যক্ত স্থানে নিয়ে একসঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করেছে।
বেলা পৌনে ১২টার দিকে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান সাংবাদিকদের বলেন, বাড়িটিতে দুটি মরদেহ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া একটি একে-২২ রাইফেল, পাঁচটি অবিস্ফোরিত গ্রেনেড, তিনটি পিস্তল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে র্যাব-৭ এর ফেনী ক্যাম্প পিপিএম অধিনায়ক শাফায়াত জামিল ফাহিম যুগান্তরকে বলেন, আমরা আস্তানাটি ঘিরে ফেললে সেখান থেকে মুহুর্মুহু গুলি ছোড়া হয়। বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণও হয়েছে।
র্যাব জানায়, রাতে র্যাব ওই বাড়ি ঘিরে ফেলার পর ভেতর থেকে গুলি চালানো হয়। তখন র্যাব দূরে সরে আসে। তার পর দীর্ঘ সময় গোলাগুলি চলে। পরে ভোরের দিকে ওই বাড়িতে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটে।
চৌধুরী ম্যানশন নামে ওই বাড়ির মালিক মাজহারুল হক অন্য এলাকায় এক বাড়িতে থাকেন। মাজহারুল ও বাড়ির কেয়ারটেকারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে র্যাব।
তারা র্যাব কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন- গত মাসের শেষে পাঁচ কক্ষের ওই বাড়ি ভাড়া দেয়ার সময় ভাড়াটিয়াদের জাতীয় পরিচয়পত্র রাখা হয়নি।
মুফতি মাহমুদ খান ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, গত দুই মাসে বেশ কয়েকটি জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালিয়ে র্যাব জানতে পারে, একটি গ্রুপ চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে এবং তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ রয়েছে।
তারা একটি নাশকতার পরিকল্পনা করছে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে জোরারগঞ্জের ওই বাড়ি চিহ্নিত করে ঘিরে ফেলেন র্যাব সদস্যরা।
‘তখন ভেতর থেকে জঙ্গিরা টের পেয়ে গুলিবর্ষণ করে। এবং বেশ কয়েকটি আইইডির বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে বেশ কিছুক্ষণ গোলাগুলি চলতে থাকে। প্রায় ভোরের দিকেই বলা চলে, ভেতরে কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটে। এখান থেকেই দেখা যাচ্ছে, টিনের চাল ওপরে উঠে গেছে।’
তিনি বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্যে চার জঙ্গি ছিল ওখানে। এদের মধ্যে একজন নারী জঙ্গি।