প্রাণের ৭১

মিরসরাইয়ের ‌‘জঙ্গি অস্তানা’, বাড়ির মালিক বিএনপি নেতা

মিরসরাইয়ে সোনাপাহাড়ের জঙ্গি আস্তানায় র‌্যাবের অভিযানে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির মালিক মালিক মাজহার চৌধুরীকে আটক করেছে র‌্যাব। সোনাপাহাড়ের চৌধুরী ম্যানশন নামের ওই বাড়ির মালিক মাজহার চৌধুরী উপজেলার ৬ নম্বর ইছাখালী ইউনিয়নের ইউনিয়নের ৩ ওয়ার্ডের জমাদার গ্রামের চৌধুরী বাড়ির মৃত মাহবুর রহমানের পুত্র।

আটককৃত মাজহার উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ন সম্পাদক ও বর্তমানে উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। ইছাখালী ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি সিরাজ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

অভিযানকালে প্রেস বিফ্রিংয়ে র‌্যাব জানায়, চৌধুরী ম্যানশন নামের ৫ কক্ষের ওই বাড়িটি গত কয়েকদিন আগে এক নারী ও চার পুরুষ মিলে মালিকের কাছ থেকে ভাড়া নেয়।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদকালে মালিক মাজহারের দাবি, ‘বাড়িটি ভাড়া দেওয়ার সময় উল্লেখিত ওই ৫ জনের কারোরই কোন পরিচয় পত্র বা অন্য কোন ডকুমেন্ট তিনি জমা রাখেননি।’ কেয়ারটেকার হক বাড়িটির দেখভাল করতেন।

তবে বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে বিরাজ করছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। স্থানীয়রা জানায়, এর আগে গত ২০১৭ সালের ৮ মার্চ মিরসরাই উপজেলা সদরের রিদোয়ান মঞ্জিলের জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় র‌্যাব। র‌্যাব পুলিশের দীর্ঘ অভিযানে ওই অস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণ বোমা, গ্রেনেড ও জঙ্গি সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। রেদোয়ান মঞ্জিলের মালিক রেদোয়ানুল হক ছিলেন মিরসরাই পৌর বিএনপি’র যুগ্ন আহবায়ক। মালিক রেদোয়ানুল সে সময় দাবি করেন, একই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি কামাল ও জসিম নামের দুই ব্যক্তি ও শিশুসহ এক নারী কাপড় ব্যবসায়ী পরিচয়ে তার কাছ থেকে বাসাটি ভাড়া নেয়। সংশ্লিষ্টদের পরিচয় পত্র বা কোন কাগজপত্র তিনি জমা নেননি। অর্থাৎ পরিচয় নিশ্চিত না হয়েই তিনি তাদের কাছে বাসাটি ভাড়া দিয়েছিলেন এমনটি দাবি করেছিলেন মালিক।

এলাকাবাসীর দাবি, স্থানীয় থানা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাসা ভাড়া দেওয়ার সময় বাড়ি মালিকদের ভাড়াটিয়ার পরিচয় নিশ্চিত হতে পরিচয় পত্র ও ছবি জমা নেওয়া বাধ্যতামূলক করে। এবং পরিচয় পত্র, ছবি সহ বিস্তারিত তথ্য থানায় জমা দেয়ার জন্য একাধিকবার নির্দেশনা দিলেও বিএনপি সমর্থিত দুই মালিকের কেউই সেটি আমলে নেননি; যা সত্যিই রহস্যজনক। এছাড়া উভয় জঙ্গি আস্তানা বিএনপি নেতাদের বাড়িতে যা স্থানীয়দের উদ্ধেগে ও দু:চিন্তায় ফেলছে।

উপজেলার ৫ নম্বর ওসমানপুর ইউনিয়নের সভাপতি মহিউদ্দিন নিজামী জানান, উপজেলায় সন্ধান পাওয়া দুই জঙ্গি আস্তানার দুটিই বিএনপি নেতার বাড়ি; উভয় মালিকের বক্তব্যও অভিন্ন। এটিই প্রমাণ করে বিএনপি নেতারাই জঙ্গি লালন-পালন করছেন। মালিকদের যোগসাজসে জঙ্গিদের বাড়ি ভাড়া দেওয়ার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে নাশকতা চালানোর ছক আঁকা হয়েছে কিনা এসব বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানাই।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*