দেহরক্ষীর গুলিতে আফগান পুলিশ প্রধান নিহত
আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশে বন্দুক হামলায় দেশটির পুলিশ প্রধান, প্রাদেশিক গভর্নর ও এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার এক বৈঠকের পর গভর্নরের দেহরক্ষীর গুলিতে পুলিশ প্রধান জেনারেল আবদুল রাজিক নিহত হয়েছেন। নিহত হয়েছেন কান্দাহারের গোয়েন্দা প্রধান আবদুল মোহমিন। গোলাগুলির ওই ঘটনায় গভর্নর জালমি ওয়েসাও নিহত হয়েছেন। ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেছেন শীর্ষ মার্কিন কমান্ডার জেনারেল স্কট মিলার। এ ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে তালেবান জঙ্গিগোষ্ঠী। খবর আলজাজিরা ও ডনের।
আফগানিস্তানের পার্লামেন্ট নির্বাচনের একদিন আগে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটল। ফলে কান্দাহার প্রদেশের নির্বাচন এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রাদেশিক গভর্নরের কম্পাউন্ডে বৈঠকের পর দেহরক্ষীর চালানো গুলিতে নিহত হন রাজিক ও মোহমিন। গুরুতর আহত গভর্নরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুক্ষণ পর ডেপুটি গভর্নর আঘা লালা দস্তগেরি গভর্নরের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। পাল্টা গুলিতে ওই দেহরক্ষীও নিহত হয়েছে বলে প্রাথমিক খবরে জানা গেছে।
আফগান তালেবানের জমদূত হিসেবে পরিচিত ছিলেন রাজিব। হাজার হাজার তালেবান জঙ্গিদের হত্যা করেছেন তিনি। জঙ্গিদের নির্যাতনের জন্য বিশেষ সেল পরিচালনা করতেন এ পুলিশ প্রধান। জঙ্গিরা তাকে অসংখ্যবার হত্যার চেষ্টা করেছে। মিশনের পর মিশন পরিচালনা করেছে। কিন্তু প্রতিবারই তিনি বেঁচে গেছেন। এবার গভর্নরের দেহরক্ষীকে দিয়েই মিশন সফল করেছে তালেবান জঙ্গিরা। মার্কিন কমান্ডার মিলার বলেন, ‘আমরা বহুদিন একত্রে কাজ করেছি। আফগানিস্তান সত্যিকারের একজন বীরকে হারাল। দেশের জন্য অনেক মহৎ কিছুই তিনি করেছেন।’
তালেবান এ হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে। তারা জানিয়েছে, আফগানিস্তানে ন্যাটো জোটের প্রধান মিলারকে টার্গেট করেই এ হামলা চালানো হয়েছিল। ন্যাটো কর্মকর্তারা বলেন, মিলার অক্ষত পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। ভোটের আগে এ হামলায় রাজিকের মৃত্যুতে কার্যত নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে কান্দাহার।
ফলে জনগণের ইচ্ছায়ই সেখানে ভোট পেছানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির মুখপাত্র হারুন চাকানসুরি। শিগগির ভোটের দিন ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি। তবে কান্দাহারে ভোট পেছালেও আফগানিস্তানজুড়ে বাদবাকি প্রায় সব জায়গায় আজ (শনিবার) নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশা করা হচ্ছে। নেয়া হচ্ছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শুধু ভোটের দিনটির জন্যই ৫০ হাজার নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোতায়েন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
শনিবারের এ পার্লামেন্ট নির্বাচনকে আগামী বছর এপ্রিলে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দেশজুড়ে সরকারের সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের সক্ষমতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতার একটি পরীক্ষা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ২০০১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান শাসন পতনের পর দেশটিতে এবার নিয়ে তৃতীয় পার্লামেন্ট নির্বাচন হচ্ছে। তালেবান জঙ্গিরা শুরু থেকেই এ নির্বাচন বানচালের হুমকি দিয়ে আসছে। নির্বাচনী প্রচার চলার মাঝে দেশজুড়ে হামলায় এরই মধ্যে অন্তত ১০ জন প্রার্থী নিহত হয়েছে।