প্রাণের ৭১

বৃদ্ধাশ্রমে আত্মহত্যা করলেন এক বৃদ্ধ বাবা

রাউজানে নোয়াপাড়াস্থ আমেনা-বশর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে আবুল হাশেম(৫৪) নামে এক বৃদ্ধ বাবা আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সে উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের গফুর শাহ সিকদারের বাড়ীর মৃত ফজল বারীর পুত্র। সে গত ২০১৪ সালের ১০ই নভেম্বর হতে এই বৃদ্ধাশ্রমে অবস্থান করছেন।

২৩ অক্টোবর রাত আটটার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে।

এই বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রের সেবক প্রদীপ দত্ত জানান, রাত আটটার দিকে তার বিছানায় খাবার নিয়ে দেখি গলায় ব্যান্ডেজের কাপড় পেছানো অবস্থায় তার বিছানার পাশে জানালার সাথে অস্বাভাবিকভাবে ঝুলে আছে। তার কক্ষে থাকা নুরুল আমিন, মোহাম্মদ হোসেন নামাজ পড়তে এবং দুলাল দাশ খাওয়ার খেতে যাওয়ার পর সে আত্মহত্যা করেছে বলে মনে করেন সেবক প্রদীপ দত্ত।

বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রটির তত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ফারুক জানান, মাস খানেক পূর্বে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত আবুল হাসেমকে তার বোন এসে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অপারেশন করে তার বাম পায়ের হাটুর নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়। গত ১২ দিন পূর্বে তার দুই বোন এসে পুনরায় দিয়ে যান। এমতাবস্থায় তার ডান পাও ধীরে ধীরে অচল হয়ে পরে। রাত-দিন পায়ের যন্ত্রনায় চিৎকার ও কান্নাকাটি করত। গত সোমবার তার বোন দেখতে এলে সে তাদের সাথে বাড়ি যেতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা আগামী বৃহস্পতিবার এসে তাকে নিয়ে যাবে বলেছিল। দীর্ঘ চার বছর ধরে সে এখানে অবস্থান করলেও তার বোন ছাড়া স্ত্রী-পুত্র কেউ তাকে দেখতে আসে নি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস.আই. শেখ জাবেদ ধারণা করেন বৃদ্ধ হাসেম শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন।

জানা যায়, অাত্মহননকারী হাসেমের হলদিয়াস্থ নিজ বসত বাড়ীতে তার স্ত্রী ও সন্তানরা বসবাস করছেন। তার তিন পুত্রের মধ্যে দুই পুত্র দুবাই প্রবাসী ও একজন স্থানীয় মাদ্রাসার ছাত্র। এরা কেউ তার খোঁজ খবর নেন নি।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া নেয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব দিদারুল আলম বলেন, তার লাশ যদি তার পরিবার গ্রহণ না করেন সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা সম্পন্ন করে বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রের ব্যবস্থা দাফন সম্পন্ন করা হবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে এই বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে ১১ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী আশ্রয়ে আছেন।






মতামত দিন।

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*