বিশ্বকাপ সম্প্রচার নিয়ে কাতার-ইসরায়েল যুদ্ধ!
মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থা এখনো স্বাভাবিক নয়। বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় সময়ের বিবর্তনে রাজনৈতিক মেরুকরণ ঘটেছে অনেক বেশি। আর সবচেয়ে বেশি অস্থিরতা বিরাজ করে স্বাধীন ফিলিস্তিন ইস্যুতে। মিশর, সৌদি আরব এবং আরব আমিরাতসহ কয়েকটি আরব দেশ এখন ইসরায়েলের পাশে। আবার কয়েকটি আরব রাষ্ট্র যারা ইসরায়েলকে মেনে নিতে পারেনি তাঁদের মধ্যে কাতার অন্যতম। তবে এবার অন্য এক বিষয় নিয়ে রীতিমত যুদ্ধের আবহ তৈরী হয়েছে কাতার-ইসরায়েল এর মধ্যে।
অবাক হলেও, সম্পূর্ণ ভিন্ন সেই বিষয়টি হচ্ছে, রাশিয়া বিশ্বকাপ। অবাক হলেন? অবাক হওয়াটাই তো স্বাভাবিক। এবার বিশ্বকপাএ এই দুটি দেশের কেউই যে খেলছে না। তাহলে?
বিষয়টি একটু খুলে বলা যাক।
কাতার ভিত্তিক টিভি চ্যানেল বে-ইন স্পোর্টস পুরো মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়া বিশ্বকাপ সরাসরি সম্প্রচারের জন্য স্বম্প্রচার স্বত্ব কিনেছিল। আর তাই অনেক আগে থেকেই তারা ঘোষণা দিয়ে আসছে বে-ইন স্পোর্টসই মধ্যপ্রাচ্যে একমাত্র সম্প্রচার সত্ত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান। আর এই কারণে বিশ্বকাপের সময় প্রতিটি টিভি সাবস্ক্রাইভারকে ৪৫ ডলার করে প্রদান করতে হবে।
কিন্তু এটা যেন কিছুতেই মানতে পারছে না ইসরায়েল। এটা তো দিনের আলোর মত পরিস্কার- মধ্যপ্রাচ্যে নিজের শক্তির প্রমাণ দিতে বদ্ধপরিকর ইসরায়েল। আর সেটা যেভাবেই হোক এবং যেকোনো মূল্যেই হোক না কেন।
তাই হঠাৎ করেই বে-ইন এর ব্যবসায় ধ্স নামানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ইসরাইলের টিভি চ্যানেল মাকান। মধ্যপ্রাচ্যে বিশ্বকাপ সম্প্রচারের জন্য তারাও ৫৬ লাখ ডলারে কিনি নিয়েছে বিশ্বকাপ সম্প্রচার স্বত্ব। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এত বিশাল পরিমাণ অর্থ ব্যায় করেও মাকান ঘোষণা দিয়েছে তাঁরা বে-ইন স্পোর্টসের মত সাবস্ক্রাইবারের কাছ থেকে কোনো অর্থ গ্রহণ করবে না। অর্থাৎ সম্পূর্ণ ফ্রি-তে বিশ্বকাপের খেলা দেখতে পারবে মাকান টিভিতে!
ইসরায়েল, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর, মিশর, জর্ডান, লেবাননের ফুটবলপ্রেমীদের জন্য পুরোপুরি ফ্রিতে বিশ্বকাপের খেলা দেখার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে ইসরায়েলি টিভি চ্যানেলটি। সোজা বাংলায় বললে, কাতারের বে-ইন স্পোর্টসের একচ্ছত্র ব্যবসায় পুরোপুরি জল ঢেলে দিল ইসরায়েলের মাকান।
ইসরায়েল ঘোষণা দিয়েছে, আরব অঞ্চলে পুরোপুরি ফ্রিতে বিশ্বকাপ দেখার ব্যবস্থা করবে তাঁরা। এমন কি আরবিতে ধারাভাষ্যও সম্প্রচার করা হবে, সেই সঙ্গে থাকবে হিব্রু ভাষার ধারাভাষ্যও। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, আরবি ভাষায় খোলা একটি ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে এই ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল!