টাকা দিলেই জেলে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি!
টাকার বিনিময়ে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নে জেলেদের বিশেষ ভিজিএফ তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি করার অভিযোগ উঠেছে। জেলেদের অভিযোগ, ইউপি সদস্যদের নির্ধারিত অঙ্কের টাকা দিয়ে যে কোনো পেশার মানুষ তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি করতে পারে। কিন্তু টাকা না দিলে জেলে হলেও তালিকায় নাম ওঠে না।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে ওই ইউনিয়নের ১২ নম্বর ডিগ্রি বাজারে স্থানীয় জেলেদের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
ভুক্তভোগী জেলেদের অভিযোগ, উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের প্রত্যেক ওয়ার্ড ইউপি সদস্যকে জেলেদের ভিজিএফ তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি করতে জনপ্রতি ৫০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা দিতে হয়। নির্ধারিত অঙ্কের টাকা দিলে ব্যবসায়ী, প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নামও অন্তর্ভুক্তি করা হয়। তবে ইউপি সদস্যদের ধার্যকৃত টাকা দিতে ব্যর্থ হলে প্রকৃত জেলেদের নাম তালিকায় ওঠে না।
২০ বছর জেলে পেশায় জড়িত ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন ১২ নম্বর ডিগ্রি গ্রামের শুকুর হাওলাদার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে জাইল্লাগিরি করি। কিন্তু মেম্বর জাকির মৃধা টাকা ছাড়া নাম দেয় না। ধনী মানুষদের টাহার বিনিময়ে হে নাম দেয়। আর আমরা গ্যালে বলে-তোমাগো নামে কার্ড ওয় নাই। আমার নাম দিতে এই নগদে এক হাজার টাকা নিছে। এইয়া নিয়া চেয়ারম্যানের ধারে গেলে কয়-আমার করার কিছু নাই।’
ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন টুঙ্গিবাড়িয়া গ্রামের জেলে সবুজ সরদার বলেন, ‘আমার কাছ থেকে আগে হেলাল মেম্বার দেড় হাজার টাকা নিয়া নাম দিছিল। এবার টাকা চাইছে, আমি না বলছি। তাই আমার নাম দেয় নাই।’
বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আবু হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমার কাছে কিছু লোকজন কয়েকটি ওয়ার্ডের মেম্বারদের বিরুদ্ধে ৫০০ টাকা নিয়ে জেলে তালিকায় নাম দেয়ার কথা বলেছে। আমি তদন্ত করেছি, কিন্তু সত্যতা পাইনি। আসলে কিছু লোকজন এসব অপপ্রচার রটাচ্ছে।’
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তারেক আজিজের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ না করায় মন্তব্য নেয়া যায়নি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত এ আট মাস জাটকা শিকার থেকে বিরত থাকা জেলেদের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত বিশেষ ভিজিএফ সুবিধা দেয়া হবে। এ অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তৈরি করা ভিজিএফ তালিকায় অন্তর্ভুক্তি জেলেদের প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে।